করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নিন

সৈয়দা রাকীবা ঐশী

করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন
ফাইল ছবি

করোনা সংক্রমণের হার দেশে দ্রুত বাড়ছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে দৈনিক শনাক্তের হার শূন্যের কাছাকাছি চলে গিয়েছিল। এখন আবার তা ১৪ শতাংশের ওপরে উঠেছে। প্রতিদিনই বাড়ছে এই হার। নতুন এই ঢেউয়ের শুরুতে সংক্রমণের বেশির ভাগই ছিল ঢাকায়। এখন আবার তা সারা দেশে ছড়াতে শুরু করেছে। রোববার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে শনাক্তের হার ছিল ২৭ শতাংশের ওপর।

করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন আগের সব ধরনের চেয়ে দ্রুত ছড়ায়। উন্নত অনেক দেশে প্রায় শতভাগ মানুষকে দুই ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। দেওয়া হয়েছে বুস্টার ডোজও। এর পরও সেসব দেশে সংক্রমণ ব্যাপক হারে ছড়িয়েছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও করোনার নতুন ঢেউ ব্যাপক হারে ছড়িয়েছে। দেশটিতে দৈনিক সংক্রমণ পৌনে তিন লাখে উঠেছে। আমাদের টিকা প্রদানের হার এখনো কম। বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়েছে আরো কম। এই অবস্থায় সংক্রমণ রোধে শুধু বিধি-নিষেধ আরোপ করাটাই যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন ব্যাপক জনসচেতনতা।

মানুষ সচেতন হলে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে কঠোর বিধি-নিষেধ বা লকডাউনের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে করোনার এমন কঠিন পরিস্থিতিতেও বহু মানুষের আচরণে ন্যূনতম সচেতনতাটুকুও দেখা যায় না। যানবাহন, শপিং মল, হাট-বাজারে মানুষের গাদাগাদি ভিড় এবং বেশির ভাগেরই মাস্ক নেই। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, আন্তনগর ট্রেনে বিধি-নিষেধ কিছুটা মানা হলেও লোকাল ট্রেনে ততটা মানা হয়নি। লঞ্চে বিধি-নিষেধের কোনো চিহ্নই দেখা যায়নি। বাসে সিটের অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া হয়েছে। হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। মানুষও ছিল বেপরোয়া। এই অসচেতনতার কত বড় মূল্য আমাদের দিতে হতে পারে তার কিছুটা ইঙ্গিত এখনই পাওয়া যাচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগীর চাপ দ্রুত বাড়ছে। শিগগিরই আইসিইউ সংকট দেখা দিতে পারে।

করোনা মহামারির কারণে দেশের অর্থনীতির রীতিমতো বিপর্যস্ত অবস্থা। এমন সময়ে ফের যদি মহামারি অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে তাহলে হয়তো আবারও আমাদের কঠোর লকডাউনে যেতে হতে পারে। সেটি যেমন দেশের জন্য, তেমনি ব্যক্তির জন্যও অত্যন্ত করুণ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। তাই সবাইকে বিধি-নিষেধ মেনে চলতে হবে। পাশাপাশি সর্বত্র তা যথাযথভাবে পালিত হচ্ছে কি না, সেই নজরদারি জোরদার করতে হবে।

লেখক : শিক্ষার্থী

শেয়ার করুন