রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, বাংলাদেশ পুলিশ দেশের একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। মহান মুক্তিযুদ্ধে এ বাহিনীর রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ডাক দেন। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের ১ হাজার ২৬২ জন সদস্য জীবন উৎসর্গ করেন। শুধু মহান মুক্তিযুদ্ধেই নয়, দেশের প্রয়োজনে ও বিভিন্ন সংকটে জীবন উৎসর্গ করতে কুণ্ঠাবোধ করেননি পুলিশ সদস্যরা। চলমান কোভিড-১৯ অতিমারিতে দেশ ও জনগণের সেবায় নিয়োজিত ১০৬ জন পুলিশ সদস্য মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আত্মোৎসর্গকারী পুলিশের বীর সদস্যদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।
রোববার (২৩ জানুয়ারি) ‘পুলিশ সপ্তাহ -২০২২’ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে তিনি এসব কথা জানান।
তিনি বলেন, পুলিশ সপ্তাহ ২০২২ উপলক্ষে আমি বাংলাদেশ পুলিশের সব সদস্যকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
আবদুল হামিদ বলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশ পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকা দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে। বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে অপরাধের ধরন ও কৌশলে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটছে। অপরাধীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন ধরনের অ্যাপস ব্যবহার করে সাইবার অপরাধ সংঘটন করছে, যা প্রতিরোধ করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ। সাইবার অপরাধ মোকাবিলায় পুলিশের তথ্যপ্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়াতে বর্তমান সরকার ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষে ‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, পুলিশ হবে জনতার’ শ্লোগানে উজ্জীবিত হয়ে বাংলাদেশ পুলিশ বছরব্যাপী নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে, যার মাধ্যমে এ বাহিনী আরও জনবান্ধব প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠবে বলে আমি মনে করি। বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশপ্রেম, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে জনগণের সেবা নিশ্চিত করবে- এ প্রত্যাশা করি । আমি পুলিশ সপ্তাহ ২০২২ আয়োজনের সার্বিক সাফল্য কামনা করি।