মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ হয়েছে কি না, হয়ে থাকলে এর পেছনে কোন দল কতো টাকা খরচ করেছে, এই টাকা কোথা থেকে খরচ হয়েছে-এসব বিষয়ে জাতীয় সংসদে সুনির্দিষ্ট তথ্য উপস্থাপনের দাবি উঠেছে।
রোববার (২৩ জানুয়ারি) সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির হারুনুর রশীদ ও জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক এই দাবি জানান। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি- এই দুই দলের তথ্য জানতে চেয়েছেন তারা।
তাদের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সোমবার (২৪ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে এ বিষয়ে বক্তব্য দেবেন বলে সংসদকে অবহিত করেন। তবে সংসদের বৈঠক বুধবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে।
এর আগে ১৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম দাবি করেছিলেন, গত পাঁচ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে লবিংয়ের জন্য বিএনপি-জামায়াতের টাকা দেওয়ার প্রমাণ তার কাছে আছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, অনুমান নির্ভর বক্তব্য উপস্থাপন করা ঠিক নয়। ১২টি আন্তর্জাতিক সংস্থা জাতিসংঘকে নোটিশ করেছে র্যাবকে শান্তিরক্ষা মিশনে না নিতে। সেটার কী অবস্থা, যুক্তরাষ্ট্র যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সেটার কী অবস্থা। এসব নিয়ে আগামী দিন সুস্পষ্ট তথ্যসহ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতীয় সংসদে বিবৃতি দেবেন বলে আশা করি।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি আসলে যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ করেছে কি না, আওয়ামী লীগ করেছে কি না, এসব বিষয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করবেন।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক বলনে, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সংসদে বলেছেন, বিএনপি যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্টের পেছনে ৩২ কোটি টাকা খরচ করেছে। কী কারণে তারা এই লবিস্ট নিয়োগ দিয়েছিলো? এটা কী দেশের জনগণের স্বার্থে? রাষ্ট্রের স্বার্থে? না কি জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে? এই বিষয়টি ক্লিয়ার হয়নি।
মুজিবুল হক আরও বলেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের পর বিএনপির একজন নেতা সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, ‘ক্ষমতাসীন দল ২০১৪ সাল থেকে লবিস্ট নিয়োগ করেছে। ক্ষমতাসীন দল লবিস্টের পেছনে তিন লাখ ২০ হাজার ডলার বা ৩০ কোটি টাকা প্রতি বছর খরচ করে আসছে।’
জাতীয় পার্টির মহাসচিব আরও বলেন, ক্ষমতাসীন দল আসলে লবিস্ট নিয়োগ করেছিলো? কী কারণে করেছিলো? এই টাকা কী সরকারের কোষাগার থেকে গেছে? না কি দলের নিজস্ব সোর্স থেকে গেছে? দেশের মানুষ এবং আমরাও জানতে চাই বিএনপি লবিস্ট নিয়োগের টাকা কোথা থেকে পেলো? আওয়ামী লীগও লবিস্ট নিয়োগ করেছিলো কি না, করলে তার ফান্ড কোথা থেকে পেলো? এই বিষয়ে নিরপেক্ষ সংস্থার তদন্ত বা সরকারের একটি বিবৃতি জানতে চাই। দেশের মানুষকে এটা জানানো হোক।
পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সংসদকে জানান, আগামীকাল তিনি এ বিষয়ে সংসদে বিবৃতি দেবেন। অবশ্য সংসদের বৈঠক বুধবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।