ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমাদের দ্বন্দ্ব যখন চরমে, তখন দেশটির প্রেসিডেন্ট পুতিনের প্রশংসা করলেন জার্মান নৌ বাহিনী প্রধান কে-আচিম শোয়েনবাখ। এই প্রশংসাই তার জীবনে কাল হয়ে দাঁড়ালো। পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।
ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় এক লাখ সেনা মোতায়েন করে রেখেছে প্রতিবেশী দেশ রাশিয়া। যেকোনো মুহূর্তে রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আমেরিকা। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে প্রশংসা করে পদত্যাগ করেছেন জার্মানির নৌবাহিনীর প্রধান কে-আচিম শোয়েনবাখ।
জার্মানির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের বরাত দিয়ে ২৩ জানুয়ারি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি। গত শুক্রবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে থিংকট্যাংকের সঙ্গে এক বৈঠকে শোয়েনবাখ ওই মন্তব্য করেছিলেন।
জার্মানির নৌবাহিনীর সদ্য পদত্যাগকৃত প্রধান কে-আচিম শোয়েনবাখ রুশ প্রেসিডেন্টকে নিয়ে বলেছিলেন, রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করতে চায়; এটি ‘বাজে কথা’। তিনি আরও বলেছিলেন যে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (সবার) সম্মান পাওয়ার যোগ্য।
জার্মানির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এএফপি’কে জানিয়েছেন, ভাইস-অ্যাডমিরাল কে-আচিম শোয়েনবাখ অবিলম্বে পদত্যাগ করবেন।
মূলত নয়াদিল্লির ওই বৈঠকে শোয়েনবাখের বিতর্কিত মন্তব্যের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পরই শোরগোল পড়ে যায়। ওই ভিডিওতে জার্মান নৌপ্রধানকে বলতে শোনা যায়, ‘প্রেসিডেন্ট পুতিন কেবল অন্যদের কাছ থেকে সম্মান পেতে চান। তার চাওয়া অনুযায়ী তাকে সম্মান দেওয়াটা সহজ এবং এবং সম্ভবত তিনি সেটি পাওয়ার যোগ্যও।’
তিনি আরও বলেছিলেন, ২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে রুশ দখলদারিত্বে চলে যাওয়া ক্রিমিয়া উপদ্বীপ (চূড়ান্তভাবে) রাশিয়ার হাতে চলে গেছে এবং আর কখনোই সেটি ইউক্রেনের কাছে ফিরবে না।
শনিবার অবশ্য নিজের ওই বিতর্কিত মন্তব্য ব্যাখ্যা করেন কে-আচিম শোয়েনবাখ। তার দাবি, তার বক্তব্য জার্মান সরকারের নীতির প্রতিনিধিত্ব করে না এবং এটি বিবেচনাশূন্য। টুইটারে তিনি জানিয়েছিলেন, ‘সমালোচনা বা তিরস্কারের কোনো প্রয়োজন নেই এবং এটি স্পষ্টতই একটি ভুল ছিল।’
পরে শনিবার দিনের শেষভাগে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি জানান, জার্মানির কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। ‘জার্মানির নৌবাহিনীকে আরও ক্ষতি’ হওয়া এড়াতেই পদত্যাগ করেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, ইউক্রেন সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরেই প্রায় এক লাখ সেনাসদস্য মোতায়েন করে রেখেছে প্রতিবেশী দেশ রাশিয়া। যেকোনো মুহূর্তে রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ করতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। যদিও ইউক্রেনে হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে বরাবরই দাবি করে আসছে মস্কো।