করোনায় একদিনে আরও ১৫ জনের মৃত্যু, শনাক্তের হার ৩২ শতাংশের ওপর

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতের দাফন
ফাইল ছবি

দেশে গত একদিনে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। এই সময়ে করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন আরও ১৫ জন। ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে ১৪ হাজার ৮২৮ জনের শরীরে। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৩২ শতাংশ ছাড়িয়েছে।

আজ সোমবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

universel cardiac hospital

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশে করোনায় মোট মারা গেছেন ২৮ হাজার ২৩৮ জন। আর মোট শনাক্তের সংখ্যা ১৬ লাখ ৯৯ হাজার ৯৬৪।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৫ হাজার ৮০৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এই সময়ে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৯৯৮ জন। মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা ১৫ লাখ ৫৭ হাজার ৮৫৯ জন।

মারা যাওয়া ১৫ জনের মধ্যে নয়জন পুরুষ ও ছয়জন নারী। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের ছয়জন, ময়মনসিংহ বিভাগের তিনজন, সিলেট বিভাগের দুইজন এবং চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল বিভাগে একজন করে। এদিন রংপুর বিভাগে কেউ মারা যায়নি।

সপ্তাহের ব্যবধানে শনাক্ত বেড়েছে ১৮১ শতাংশ, মৃত্যু ৮৮ শতাংশ

এদিকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব সূচকে করোনার ঊর্ধ্বগামী (নমুনা পরীক্ষা, শনাক্ত, মৃত্যু এবং সুস্থতা) প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। চলতি বছরের ইপিডেমিওলজিক্যাল দ্বিতীয় সপ্তাহের (১০-১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত) তুলনায় তৃতীয় সপ্তাহে (১৭-২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত) নমুনা পরীক্ষা ৩৪ দশমিক ৭ শতাংশ, শনাক্ত ১৮০ দশমিক ৮ শতাংশ, সুস্থতা ৯৯ দশমিক ৬ শতাংশ এবং মৃত্যু ৮৮ দশমিক এক শতাংশ বেড়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ইপিডেমিওলজিক্যাল দ্বিতীয় সপ্তাহে সর্বমোট ১ লাখ ৮৯ হাজার ৬৩০টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৪ হাজার ১১ জন রোগী শনাক্ত হয়। একই সময়ে ১ হাজার ৯৮৮ জন সুস্থ এবং ৪২ জনের মৃত্যু হয়। ইপিডেমিওলজিক্যাল তৃতীয় সপ্তাহে ২ লাখ ৫৫ হাজার ৪৫৫ টি নমুনা পরীক্ষায় ৬৭ হাজার ৪২৫ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। একই সময়ে সুস্থ হন ৩ হাজার ৯৬৮ জন। এ সময়ে সর্বমোট ৭৯ জন রোগীর মৃত্যু হয়।

পরিসংখ্যান অনুসারে, গত এক সপ্তাহে করোনায় মৃত ৭৯ জনের মধ্যে পুরুষ ৪৭ জন ও নারী ২৩ জন। তাদের মধ্যে ৫১ জনই (৬৪ দশমিক ৬ শতাংশ) টিকা নেননি। অবশিষ্ট ২৮ জন (৩৫ দশমিক ৪ শতাংশ) টিকা নিয়েছেন। এ ২৮ জনের মধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ছয়জন ও ২২ জন নিয়েছেন দ্বিতীয় ডোজ। গত একসপ্তাহে করোনায় মৃত ৭৯ জনের মধ্যে ৫২ জনের কো-মরবিডিটিতে ভুগছিলেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশ রোগী ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপে ভুগছিলেন। এছাড়া অনেকে বক্ষব্যাধি, হৃদরোগ, কিডনি, গ্যাস্ট্রোলিভার, স্ট্রোক এবং ক্যানসারে ভুগছিলেন।

২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। গত ২০ নভেম্বর দেশে প্রথমবারের মতো এবং ৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয়বারের মতো করোনায় মৃত্যুহীন দিন দেখে বাংলাদেশ। এছাড়া বাকি সব দিনই মৃত্যু দেখেছে বাংলাদেশ।

গত ৫ আগস্ট দেশে সর্বোচ্চ ২৬৪ জন রোগী মারা যায়। ২৮ জুলাই সর্বোচ্চ শনাক্ত হয় ১৬ হাজার ২৩০ জন। তবে সেপ্টেম্বর থেকে তা কমতে শুরু করে। ডিসেম্বরের শুরু পর্যন্ত সেই ধারা অব্যাহত ছিল। যদিও ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে অব্যাহতভাবে বাড়ছে সংক্রমণ। নতুন শনাক্তদের বেশির ভাগ অতি সংক্রামক ওমিক্রনে আক্রান্ত বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

শেয়ার করুন