রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্ব যেন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে না গড়ায়

সম্পাদকীয়

র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।
র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি। ফাইল ছবি

হিরোশিমা-নাগাসাকির বিভীষিকা আজও বিদ্যমান। আণবিক দানবের গ্রাসে যে সভ্যতা মুহূর্তে লোপ পেতে পারে তা আজ স্পষ্ট। এহেন পরিস্থিতিতে ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে আবারও সংঘাতের পথে হাঁটছে দুই মহাশক্তি রাশিয়া ও আমেরিকা। ফলে ইউক্রেন থেকেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূত্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকদের একাংশ।

বেশ কয়েকবছর ধরে পূর্ব ইউক্রেনে সরকারি বাহিনী ও ‘রাশিয়ার মদতপুষ্ট’ বিদ্রোহীদের মধ্যে লড়াই চলছে। বিদ্রোহীরা ওই অঞ্চলকে ইউক্রেন থেকে পৃথক করে রাশিয়ার অংশ হিসেবে ঘোষণা করতে চায়। পরিস্থিতি আরও ঘোরাল হয়ে ওঠে ২০১৪ সালে। হামলা চালিয়ে ক্রিমিয়া দখল করে রাশিয়া। তারপর থেকেই অধুনা সোভিয়েত ইউনিয়ন-ভুক্ত দুই দেশের মধ্যে বিবাদ চরমে। এহেন উত্তেজক পরিস্থিতিতে রাশিয়াকে ইউক্রেন থেকে দূরে থাকার হুঁশিয়ারি দিয়েছে আমেরিকা।

universel cardiac hospital

উল্লেখ্য, সম্প্রতি ইউক্রেনের মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স তথা সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের কিরইয়োল বুদানভ জানান, ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় ৯২ হাজার সেনা মজুত করেছে রাশিয়া। মার্কিন পত্রিকা ‘মিলিটারি টাইমস’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বুদানভের দাবি, চলতি জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারি মাসে হামলা চালাতে পারে মস্কো। শুরুতে রুশ যুদ্ধবিমান ও গোলন্দাজ বাহিনী ইউক্রেনের সামরিক পোস্টগুলিতে হামলা চালাবে। তারপর আসবে রুশ পদাতিক বাহিনী। যদিও সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে রাশিয়া।

জোর করে সীমানা বদলের সুযোগ নেই। ন্যায্যতার প্রশ্নের চেয়েও বড় এই নীতি। এর আলোকে ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করা এবং রাশিয়ার ওপর বড় ধরনের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দেওয়া যেতেই পারে। নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলে তেলনির্ভর রাশিয়ার ভঙ্গুর অর্থনীতির ওপর তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।

অবশ্য শেষ পর্যন্ত পুতিনের সিদ্ধান্তের ওপরেই সবটা নির্ভর করছে। তিনি ইউক্রেনকে বৃহত্তর রাশিয়ার জৈবিক অংশ বলে মনে করেন। ২০০৫ সালে তিনি বলেছিলেন, সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়া শতাব্দীর প্রধান ভূরাজনৈতিক বিপর্যয়। ইউক্রেনকে সংযুক্ত করে আংশিকভাবে হলেও সোভিয়েত ইউনিয়নের উত্তরাধিকার ফিরিয়ে আনার সুযোগ তিনি ভালোমতোই খুঁজছেন।

বাস্তবতা যা-ই হোক, আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই।পুতিনের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। কারণ, করোনায় বিপর্যস্ত ‍বিশ্বে যুদ্ধ সু্স্থ ও সচেতন কারওই কাম্য হতে পারে না।

শেয়ার করুন