ইউক্রেন সীমান্তে সেনা সমাবেশ করছে রাশিয়া। শুধু তা-ই নয়, পার্শ্ববর্তী দেশ বেলারুশেও রুশ সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে। যাতে প্রয়োজনে ওই দেশ থেকেও আক্রমণ করা যায়। পূর্ব ইউরোপের দেশ ইউক্রেনকে সহায়তা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোট একসঙ্গে কাজ করছে। এরকম যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে বাংলাদেশের সঙ্গেও যোগাযোগ করছে ওয়াশিংটন ও মস্কো। ইতোমধ্যে আমেরিকা তাদের আনুষ্ঠানিক অবস্থান জানিয়ে ডিমারশে লেটার দিয়েছে বাংলাদেশকে।
অন্যদিকে বুধবার (২৬ জানুয়ারি) রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ম্যানটিটস্কি পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে দেখা করে তার দেশের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বুধবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘দুপক্ষই তাদের অবস্থান জানিয়েছে।’
এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ কী অবস্থান নেবে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আমরা যেকোনও সংঘাতের বিরোধী। আমরা মনে করি আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে পৌঁছানো সম্ভব। আমরা আশা করি সব পক্ষ সংঘাত পরিহার করে নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধানে আসবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বলেন, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর থেকে ওই অঞ্চলটিতে রাষ্ট্র গঠন প্রক্রিয়া আগেও স্থিতিশীল ছিল না, এখনও নেই। নতুন স্নায়ুযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ইউক্রেনে সংঘাতময় পরিস্থিতি বিশ্বকে আরও অস্থিতিশীল করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ইউক্রেনের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক কম কিন্তু বহুপক্ষীয় ব্যবস্থায় বাংলাদেশকে এ বিষয়ে সম্পৃক্ত করার জন্য উভয়পক্ষ অনুরোধ করবে।
তিনি বলেন, নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বিষয়টি আলোচিত হবে না। কারণ, আমেরিকা ও রাশিয়া উভয়ই ভেটো ক্ষমতার অধিকারী। সেক্ষেত্রে সাধারণ অধিবেশনে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা বেশি। যার সদস্য বাংলাদেশ। আবার জেনেভাতে মানবাধিকার কাউন্সিলে ইউক্রেন বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করতে পারে। সেখানেও ৪৭ সদস্যবিশিষ্ট কাউন্সিলে সদস্য হিসেবে রয়েছে বাংলাদেশ।
রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে বাংলাদেশের কী সমস্যা হতে পারে জানতে চাইলে আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, রাশিয়ান প্রযুক্তিতে রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে। এর কাজ অনেকটা শেষ। এক্ষেত্রে কী প্রভাব পড়বে সেটি নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে বলা মুশকিল।