আত্মনির্ভর ভারত গড়ার বাজেট ঘোষণা মোদি সরকারের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

অর্থমন্ত্রী হিসেবে মঙ্গলবার ভারতের লোকসভায় চতুর্থবার বাজেট পেশ করেন নির্মলা সীতারমণ
অর্থমন্ত্রী হিসেবে মঙ্গলবার ভারতের লোকসভায় চতুর্থবার বাজেট পেশ করেন নির্মলা সীতারমণ। ছবি : সংগৃহীত

করোনা মহামারির মধ্যে ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়ে ভারতে বাজেট পেশ করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার। মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) দেশটির পার্লামেন্টে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ এই বাজেট পেশ করেন। প্রস্তাবিত এই বজেটে ভারতকে আত্মনির্ভর হিসেবে গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে দেশটির বাজেটের এই চিত্র উঠে এসেছে। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার বাজেট পেশের সময় লোকসভায় আর্থিক প্রবৃদ্ধির পথে ফেরার কথা বলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। ‘আত্মনির্ভর’ ভারতে আগামী পাঁচ বছরে বিপুল কর্মসংস্থান হবে বলেও জানান তিনি।

অর্থমন্ত্রী হিসেবে মঙ্গলবার চতুর্থবার বাজেট পেশ করেন নির্মলা। এসময় তিনি বলেন, ‘আগামী পাঁচ বছরে ৬০ লাখ নতুন কর্মসংস্থান করা হবে। আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তুলতে উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত ছাড়-সহ বিভিন্ন প্রকল্পে বিপুল সাড়া মিলেছে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলা।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের আর্থিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে ‘পিএম গতিশক্তি’ মাস্টার প্ল্যান আনা হচ্ছে। অবকাঠামো নির্মাণে জোর দেওয়ার লক্ষ্যেই ‘পিএম গতিশক্তি’ মাস্টার প্ল্যান হিসেবে কাজ করবে। করোনা মহামারির মধ্যে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের প্রতি আমার সমবেদনা। আগামী ১০০ বছরে ভারত কেমন হবে তার রূপরেখা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’

এদিকে কৃষি কাজসহ বিভিন্ন খাতে ড্রোনের ব্যবহার বাড়িয়ে তোলার উদ্দেশে স্টার্টআপ সংস্থাগুলোকে ‘ড্রোন শক্তি’ প্রকল্পের আওতায় আসার উৎসাহ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন নির্মলা সীতারমণ। একইসঙ্গে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থাগুলোকে আরও শক্তিশালী ও কার্যকরী করে তুলতে মোদি সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে বলেও জানান তিনি।

এছাড়া করোনা মহামারিতে জরুরি ভিত্তিতে ঋণ দিয়ে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি সংস্থার পাশে দাঁড়িয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে উৎসাহ দিতে ২ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে বলেও জানান সীতারমণ। ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত সেই সুবিধা চালু থাকবে।

আয়কর ছাড় নিয়ে অনেক প্রত্যাশা থাকলেও, অর্থনীতিতে ভারসাম্য বজায় রাখতে আয়কর কাঠামোতে কোনো পরিবর্তন হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ। ব্যক্তিগত কর কাঠামোও একই থাকবে বলে তিনি জানান। তবে যেসব যন্ত্রপাতি ভারতে তৈরি হয় তাদের উৎসাহ দিতে কাস্টম ডিউটি বাড়ানো হয়েছে। অর্থাৎ দেশে তৈরি কৃষি যন্ত্রপাতি সস্তা হবে। সস্তা হবে পোশাক, চামড়াজাত পণ্য, মোবাইল ফোন ও চার্জার।

এদিকে করোনা পরিস্থিতিতে অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড়াতে স্টার্টআপ ব্যবস্থায় বিশেষ ছাড় ঘোষণা করা হয়েছে। স্টার্টআপ সংস্থাগুলোকে আরও এক বছরের করে ছাড় দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, ডিজিটাল সম্পত্তিতে বসছে কর, নতুন অর্থবছর থেকে এই কর দিতে হবে।

অবশ্য শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য করছাড়ের পরিমাণ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে ভারত। আয়করে ছাড় দেওয়া হচ্ছে পেনশনভোগীদের, জাতীয় পেনশন প্রকল্পে করে ছাড় বেড়ে হয়েছে ১৪ শতাংশ।

তবে ডিজিটাল সম্পত্তির লেনদেনে দিতে হবে ৩০ শতাংশ আয়কর। অর্থাৎ ক্রিপ্টোকারেন্সির আয়ে দিতে হবে ৩০ শতাংশ কর।

শেয়ার করুন