সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে গৃহবন্দি থাকা মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির বিরুদ্ধে দুর্নীতির আরও একটি অভিযোগ এনেছে দেশটির সামরিক সরকার। এটি তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির ১১তম অভিযোগ। নোবেলজয়ী এই নেত্রী বর্তমানে দেড়শো বছরের বেশি মেয়াদে সাজার মুখোমুখি হওয়ার পথে রয়েছেন।
শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। এর আগে গত জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে সু চির বিরুদ্ধে দুর্নীতির আরও ৫টি অভিযোগ আনে জান্তা সরকার। সেসময় জানানো হয়েছিল, এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রতিটির জন্য ১৫ বছর করে কারাভোগ করতে হবে তাকে।
আলজাজিরা বলছে, বৃহস্পতিবার সু চির বিরুদ্ধে সর্বশেষ অভিযোগটি আনে পুলিশ। এতে সু চির বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ইনফরমেশন টিম এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিজের মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত একটি চ্যারিটি ফাউন্ডেশনের জন্য ৫ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার অনুদান গ্রহণ করেছিলেন অং সান সু চি। বৃহস্পতিবার এই অভিযোগ আনা হলেও এর বিচারিক কার্যক্রম ঠিক কবে নাগাদ শুরু হতে পারে সেটি ওই বিবৃতিতে জানানো হয়নি।
শান্তিতে নোবেলজয়ী ৭৬ বছর বয়সী সু চির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে ইতোমধ্যে প্রায় এক ডজন মামলা করেছে মিয়ানমারের জাতীয় ক্ষমতায় আসীন জান্তা। রাজধানী নেইপিদোর জান্তানিয়ন্ত্রত আদালতেই বিচার চলছে সেসব মামলার। সব মামলায় যদি সু চি দোষী সাব্যস্ত হন, সেক্ষেত্রে তাকে কারাগারে কাটাতে হবে দেড়শো বছরেরও বেশি সময়। সু চি অবশ্য তার বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন।
এর আগে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে উসকানি দিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি এবং কোভিড-১৯ প্রোটোকল লঙ্ঘনের মাধ্যমে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন ভাঙার দায়ে গত ৬ ডিসেম্বর সু চিকে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন দেশটির একটি আদালত। সরকারের শীর্ষ পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার ১১ মাসের মাথায় তার বিরুদ্ধে দেওয়া প্রথম কোনো রায় ছিল সেটি।
তবে সু চির বিরুদ্ধে এই রায়ের পর বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। সেসময় আদালত সু চিকে চার বছরের কারাদণ্ড দিলেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনার মুখে পরে সেটি দুই বছর কমিয়ে দেয় মিয়ানমারের জান্তা সরকার।
এরপর অবৈধ ওয়াকিটকি রাখাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে জানুয়ারি মাসের ১০ তারিখে অং সান সু চিকে আরও চার বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত তিনি ৬ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন।