অবশেষে দায়িত্ব নিতে চলেছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নতুন কমিটি। নির্বাচনী আচরণবিধি না মানায় জায়েদ খানের সাধারণ সম্পাদক পদ বাতিল করেছে আপিল বোর্ড৷ তার পরিবর্তে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিপুণ এই পদে জয়ী হয়েছেন।
আজ সন্ধায় এই ঘোষণা দিয়েছেন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান।
আজ শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টায় এফডিসিতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মোতাবেক সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খান ও কার্যকরী সদস্য পদে চুন্নুর নির্বাচন আচরণবিধি না অভিযোগ নিয়ে বৈঠকে বসে আপিল বোর্ড।
এখানে উপস্থিত ছিলেন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান, বোর্ডের সদস্য মোহাম্মদ হোসেন, দুই নির্বাচন কমিশনার জাহিদ হোসেন ও বি এইচ নিশান, অভিযোগকারী নিপুণ, নতুন সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন।
তবে এ বৈঠকে দুই অভিযুক্ত উপস্থিত ছিলেন না। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান।
এরমধ্য দিয়ে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নতুন কমিটি নিয়ে জটিলতার অবসান ঘটতে যাচ্ছে। তবে আপিল বোর্ডের এই রায় মেনে নিয়েছেন কি না সে বিষয়ে জায়েদ খানের মন্তব্য মেলেনি।
এদিকে মিটিং শুরুর দেড় ঘণ্টা আগে থেকেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এফডিসিতে। জায়েদ খানের বিপক্ষে চলে বিক্ষোভ। মিশা-জায়েদের আমলে ভোটাধিকার হারানো শিল্পীরা বিকেল ৩টা থেকে এফডিসিতে অবস্থান নেয়।
আন্দোলনকারীরা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমাদের সঙ্গে অন্যায় করেছে জায়েদ। ২০ বছর ধরে এফডিসিতে আছি। প্রায় ১০০টি সিনেমায় কাজ করেছি। আমার মতো শিল্পীকেও সে বঞ্চিত করেছে। আমি ওর বিচার চাই।
এদিকে মিটিংয়ের এক ঘণ্টা আগেও খবর পাওয়া যায় শিল্পী সমিতির কার্যালয় তালা মারা। দুজন পিয়নের কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না।
গত ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন। আর সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী হন জায়েদ খান।
তবে নির্বাচনের ফলাফল শুরু থেকেই গ্রহণ করেননি জায়েদ খানের প্রতিদ্বন্দ্বি নিপুণ। শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে ভয়ংকর অভিযোগ তোলেন তিনি। শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে নতুন করে আবার আপিল বোর্ডে অভিযোগের বিষয় তুলে আনেন ‘সাজঘর’র এ নায়িকা।
নিপুণ বলেন, আমি নির্বাচনের পরদিন স্বাক্ষর করেছিলাম একটা বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে এটা ঠিক আছে। এরপর সংবাদ সম্মেলন করিনি। কিন্তু তার আগে তার বেশকিছু অভিযোগ নির্বাচন কমিশনের আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যানকে লিখিত অভিযোগ করেছিলাম। কিন্তু সেসব অভিযোগ নিয়ে কিছুই করেননি তারা। তাই পুনরায় আপিল বোর্ডে অভিযোগ করেছি। কিন্তু যে অভিযোগ করেছি তা কেউ জানে না। গণমাধ্যমেও অভিযোগের বিষয় জানাননি নিপুণ। এ অভিযোগের বিষয় আপিল বোর্ড ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিব জানেন।
বাংলাদেশ শিল্পী সমিতির নির্বাচন শেষ হয় ২৮ জানুয়ারি। নির্বাচনের এক সপ্তাহ পার হলেও এখনো নির্বাচন নিয়ে থামছিল না বিতর্ক। শিল্পী সমিতির নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান ও কার্যকরী সদস্য চুন্নুর প্রার্থিতা স্থগিত চেয়ে আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন নিপুণ। সেই অভিযোগ আমলে নিয়ে শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান ও চুন্নুর প্রার্থিতা বাতিলে দিক-নির্দেশনার চিঠি সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবের কাছে পাঠিয়েছিলেন সোহান।