বাজারে চালের অভাব নেই, তবুও দাম কেন বাড়ছে তা খতিয়ে দেখতে খাদ্য কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়ে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, এই মুহূর্তে চালের জাতীয় মজুদ ২০ লাখ মেট্রিক টনের উপরে। স্বাভাবিক অবস্থায় এই মজুদ ১০ লাখ মেট্রিক টন থাকে। তারপরও প্রতি সপ্তাহে চালের দাম বাড়ছে, যা কাঙ্ক্ষিত নয়। এর কারণ খতিয়ে দেখতে আমরা মাঠ পর্যায়ের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। মাঠ পর্যায়ের সঠিক তথ্য আমাদের পরিকল্পনা গ্রহণে কাজে লাগবে। অবৈধ মজুদের তথ্য পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
সোমবার বিকালে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ‘অবৈধ মজুদদারি রোধে করণীয় ও বাজার তদারকি সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায়’ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
খাদ্য কর্মকর্তাদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, মিলের স্টক ভেরিফিকেশন করতে হবে, কতটুকু ক্রাসিং হলো, কতটুকু সরবারহ হলো তা সপ্তাহান্তে নিয়মিত রিপোর্ট করতে হবে। মিল মালিক, ব্যবসায়ী ও আড়ৎদারদের মুনাফা কম করে দেশের মানুষের প্রতি মানবিক হতে হবে।
কারা ধান চাল মজুদ করছে জানতে চেয়ে মন্ত্রী বলেন, আপনারা যদি জেনে থাকেন কার কাছে অবৈধ মজুদ আছে তার তথ্য দিন। তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন- ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাধন চন্দ্র বলেন, প্রয়োজন হলে চাল আমদানি করা হবে। সেটি ১০ শতাংশ শুল্কহারে আমদানি করা হবে। বোরোতে বাম্পার ফলন হয়েছে আমনেও হয়েছে, তারপরও চালের দাম বাড়ছে, যা হাস্যকর।
এসময় তিনি চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা চান।
খুচরা বিক্রেতারা চালের দাম বাড়াচ্ছে উল্লেখ করে মিল মালিকদের পক্ষে নিরদ বরণ সাহা বলেন, বাজারে সব পণ্যের দাম বাড়ছে। উৎপাদন খরচ বাড়ছে,পরিবহন ব্যয়ও বাড়ছে। চার হাত বদল হয়ে চালের দাম বাড়লেও মোকামে চালের দাম খুব বেশি বাড়েনি। খুচরা বিক্রেতারা চালের দাম বেশি বাড়াচ্ছে।
এই ব্যবসায়ী বলেন, করোনাকালে অনেক অলস অর্থ তৈরি হয়েছে। এসব অর্থ দিয়ে ধান চাল কিনে মজুদ করে রাখা হচ্ছে। বন্ধ অনেক মিলে চাল কিনে রাখা হচ্ছে। আমরা চাই অবৈধ মজুদদারির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
এ সময় বেলাল হোসেন নামের মিল মালিক বলেন, অপরিকল্পিত মজুদের কারণে চালের দাম বাড়ছে। ধান চালের ব্যবসার অভিজ্ঞতা না থাকায় তারা ধান চাল নষ্ট করে ফেলে, যা জাতীয় সম্পদের অপচয়।
রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার জি এস এম জাফরউল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোসাম্মৎ নাজমানারা খানুম, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাখাওয়াত হোসেন, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. আব্দুল বাতেনসহ রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন আসনের সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা, কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা, মিল মালিক ও ব্যবসায়ীরা অংশ নেন।