ভারতের কর্নাটকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধ করার দাবি করেছে কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা। আবার হিজাবের সমর্থনে সরব মুসলিম পড়ুয়াদের একাংশ। এই বিতর্ক ঘিরে অশান্তি ঠেকাতে এবার ব্যাঙ্গালোরের সব স্কুল-কলেজের আশপাশে ১৪৪ ধারা জারি করেছে কর্নাটক সরকার।
আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে বলে সরকারি নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে।
এর আগে অশান্তি ঠেকাতে কর্নাটকের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইয়ের সরকার মঙ্গলবার থেকে তিন দিন রাজ্যের সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। এখন শুক্রবার স্কুল-কলেজ খোলার পর রাজ্যের রাজধানীতে নয়া নিয়ম কার্যকর হবে।
ব্যাঙ্গালোরের পুলিশ কমিশনার কমল পান্ত বুধবার ১৪৪ ধারা ঘোষণা করে বলেন, শহরে উত্তেজনা রয়েছে। নতুন করে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তাই শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা অপরিহার্য। এই পরিস্থিতিতে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে স্কুল-কলেজের আশপাশে ফৌজদারি দণ্ডবিধির অনুযায়ী ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
কর্নাটকের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে হিজাব নিষিদ্ধ করার দাবিতে গেরুয়া উত্তরীয় পরে বিক্ষোভ দেখিয়েছে কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো। অন্যদিকে হিজাবের সমর্থনে পথে নেমেছে মুসলিম পড়ুয়ারা।
এদিকে হিজাব পরার অধিকার চেয়ে ছাত্রীরা কর্নাটক হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছে। বিষয়টি এখন আদালতের বিচারাধীন। বিচারপতি জানিয়েছেন, তিনি যতদিন রায় না দিচ্ছেন, ততদিন যেন রাজ্যে শান্তি বজায় থাকে। সব পক্ষ যেন ধৈর্য ধরেন।
রাজ্য সরকার জানিয়েছে, তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো ড্রেস কোড চালু করেনি। তবে রাজ্যের নিয়মানুযায়ী, স্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ নিজস্ব ড্রেস কোড চালু করতে পারে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই ড্রেস কোড চালু আছে।
এই হিজাব বিতর্ক মধ্যপ্রদেশ ও পুদুচেরিতেও ছড়িয়েছে। মধ্যপ্রদেশের শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘হিজাব স্কুল বা কলেজ ইউনিফর্মের অঙ্গ নয়। স্কুলে এলে ইউনিফর্ম পরে আসতে হবে। বাড়িতে যে যার মতো পোশাক পরতে পারেন।’ মধ্যপ্রদেশেও সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাবকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে।