অবচেতন মনেই নিজের দেশ সম্পর্কে একটা শ্লাঘা কাজ করে। দেশটার শ্রেষ্ঠত্ব কল্পনা করে ভাবতে স্বচ্ছন্দবোধ করি। আমাদের মাতৃভূমি মানব উন্নয়নের সূচকে অনেক দেশের চেয়ে এগিয়ে। শিক্ষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যেও পিছিয়ে নেই। তবে যে আবদ্ধ ধারণার পক্ষে হয়তো নিরঙ্কুশ সমর্থন মিলে যায় তা হলো-অতীতের সবকিছুই ভালো। খাবারের গুণ, সেবার মান বা কাজে নিষ্ঠা-কোনো কিছুই আগের মতো আমাদের মন ছোঁয় না।
ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, ম্যাজিস্ট্রেট-সব প্রতিষ্ঠানই শ্রেয়তর ছিল। অতীতচারী মন বর্তমানকে এভাবেই উপেক্ষা করে। এর পেছনে আমাদের সহজাত প্রবৃত্তিও হয়তো নেপথ্যে কাজ করে। তবে কোথাও যে এমন ভাবনার প্রকরণে বিজ্ঞান আছে, সেটাও আমাদের আমলে নিতে হবে।
ঔপনিবেশিক বা সামন্ততান্ত্রিক সমাজে আমজনতা আগাগোড়া বঞ্চনার শিকার হয়েছে। শিক্ষা-দীক্ষা, সম্পদ-ঐশ্বর্য, এমনকি মনোজগতেও দীনতা বাসা বেঁধে বসেছে। সেখান থেকেও একটা দাসত্বের উপলব্ধি বা বিচারবোধ কাজ করে, সন্দেহ নেই। তবে এটা অস্বীকার করার সুযোগ কম যে, সে সময়েও ভোক্তা নির্বিশেষে সেবার গুণগত মান ভালো ছিল। হয়তো উপকারভোগীর বৃহৎ অংশই ছিল শাসক শ্রেণিঘনিষ্ঠ।
তবে বর্তমান সময়ে কোনো ব্যবস্থাই কেন নাগরিকের পরিপূর্ণ সন্তুষ্টি আদায় করতে পারছে না, তা ভেবে দেখা দরকার। মানুষ নিরন্তর অতীতের সঙ্গে বর্তমানকে মিলিয়ে নিতে চায়। জনমানসে এমন ধারণা প্রোথিত যে, আগে শিক্ষক জ্ঞানী ছিলেন, বিচারক বিজ্ঞ, ম্যাজিস্ট্রেট চৌকশ, পুলিশ নিবেদিত, চিকিৎসক দেবতাতুল্য, প্রকৌশলী অঙ্গীকারবদ্ধ আর রাজনীতিকরা ছিলেন সর্বত্যাগী, দেশপ্রেমিক। কোনো ধারণাই ভিত্তিহীন নয়, বর্তমানের তুলনায় তো নয়ই। কিন্তু আমরা কি বিষয়টা একটু অন্যভাবে দেখতে পারি না?
ধরা যাক, ১৯৭০ সালে আমাদের জনসংখ্যা ছিল ৭ কোটি। এখন তা ১৮ কোটি। প্রবাসী প্রায় ২ কোটি। দেশান্তরীও হয়তো ১ কোটি। মোটকথা, জনসংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। জীবনমানও বেড়েছে। আকাঙ্ক্ষাও বেড়েছে সেই সঙ্গে। গড় আয়ু, মাথাপিছু আয়, খাদ্য, পুষ্টি, শিক্ষা-সবখানেই সমৃদ্ধির চিহ্ন। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, প্রযুক্তির বৃত্তে প্রান্তিক জনপদ, প্রত্যন্ত প্রান্ত পাকা রাস্তায় মোড়া, দালান-কোঠার অভাব নেই, নারী-পুরুষ সর্বজনীন শিক্ষার আওতায়। তবুও আমরা সন্তুষ্ট নই।
বিশ্ব এখন ছোট হয়ে এসেছে। উন্নত বিশ্বের সৌন্দর্য আমাদের মুগ্ধ করছে। উন্নত জীবন আমাদের আকৃষ্ট করছে। আমরা প্রতিনিয়ত নিজেদের সঙ্গে সভ্য দুনিয়ার তুলনা করি। বিত্ত ও ভোগের আয়োজন আমাদের প্রলুব্ধ করে তোলে। নিজেকে তুচ্ছ ও অসহায় মনে হয়। অনায়াসে ভোগের রাজ্যে আমরা প্রবেশের জন্য মুখিয়ে থাকি।
কিন্তু কীভাবে দুনিয়া সভ্য হয়েছে, তিলে তিলে গড়ে উঠেছে সভ্যতার ইমারত, তা আমরা ভেবে দেখি না। কত নিষ্ঠা, কত শ্রম, কত শৃঙ্খলা, কত ত্যাগের বিনিময়ে মানবজাতি উন্নতির এ শিখরে পৌঁছেছে, তার খোঁজ আমরা কজন রেখেছি? আকাশছোঁয়া ভবন আর অফুরন্ত বিলাসসামগ্রী আমাদের ভোগের ইচ্ছাকে নিরন্তর বাড়িয়ে দিচ্ছে। পক্ষান্তরে ন্যায়, সমতা, অন্তর্ভুক্তি, সহিষ্ণুতা, শ্রম ও শৃঙ্খলার শিক্ষা আমাদের কাছে অনুকরণীয় হয়নি।
সাম্প্রতিক সময় নানা ইস্যু ছাপিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় তর্কের পরিসরে জায়গাজুড়ে বসেছে। উচ্চশিক্ষাঙ্গনে উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টিতে রাষ্ট্র হতে প্রতিষ্ঠান-সবার করণীয় নিয়ে চুলচেরা আলোচনা চলছে। শুধু বিশ্ববিদ্যালয় কেন, সব প্রতিষ্ঠানেই যোগ্য ও পরীক্ষিত ব্যক্তিত্বের চাহিদা রয়েছে।
কিন্তু যে কারণেই হোক, আমরা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর আস্থা রাখতে পারিনি। তবে কারণগুলোকে আমরা নির্মোহভাবে যাচাই করিনি। আমরা কি দেখেছি, এখন শিক্ষা পরিবারে অন্তর্ভুক্ত জনগোষ্ঠী ৫ কোটির উপরে? উচ্চশিক্ষার নাগালে প্রায় ১ কোটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা দেড় শতাধিক। প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ও পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বাধীনতার বৈষয়িক সুফল আমরা ঘরে তুলেছি।
কিন্তু সম্পদের বণ্টন বা সুযোগের সমতা কি আমরা নিশ্চিত করতে পেরেছি? রাষ্ট্রব্যবস্থাকে কি আমরা সে লক্ষ্যে তৈরি করেছি? সুষ্ঠু পরিকল্পনামাফিক উন্নয়নের সুযোগ ও সময়-কোনোটাই পায়নি দেশ। স্বাধীনতার ৩ বছরের মাথায় রাষ্ট্র হারিয়েছে স্থপতিকে। সেই সঙ্গে নীতি ও দর্শন। শুরু হয়েছে লুটেরা শ্রেণির দখলদারি। প্রতিষ্ঠানগুলো একে একে নষ্ট হয়েছে। বিকশিত হয়েছে সুবিধাভোগী নতুন শ্রেণি, যারা কেবলই সম্পদ চায়। লোভ সীমানা পেরিয়ে যায়। উৎকট সুবিধাবাদ ও স্বার্থপরতার চাষ হয় মুক্তিযুদ্ধের পবিত্র মাটিতে।
জ্ঞানী-গুণীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন আইনশৃঙ্খলা বলে কিছুই নেই। আগে সব ছিল। ক্লান্তিকর সেশনজটের ফাঁসে আটকা সত্তর হতে পরবর্তী তিন দশকে দেখেছি বিশ্ববিদ্যালয়ে লোমহর্ষক খুন হয়েছে, মেধাবী ছাত্র-শিক্ষকের প্রাণ ঝরেছে প্রকাশ্য দিবালোকে, কথায় কথায় পুলিশ গুলি চালিয়েছে, হল ছাড়তে হয়েছে দিনরাত যে কোনো সময়।
শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধের সিন্ডিকেটও পোক্ত হয়েছিল। মনে আছে ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম বা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে সন্ধ্যার পর হাঁটা যেত না। ছিনতাই বা অপরাধের ভয়ে। সংঘবদ্ধ অপরাধীর আশ্রয়ও জুটত বিশ্ববিদ্যালয়ে। তখন কি সেসব প্রতিষ্ঠানে নামি শিক্ষকরা দায়িত্বে ছিলেন না? আসলে বিভিন্ন আর্থসামাজিক বাস্তবতায় একটা অন্যায্য পরম্পরা কীভাবে গড়ে উঠল, সেটাই দেখা দরকার।
এখন খেয়াল করতে হবে, উচ্চশিক্ষায় কারা আসছে? বঙ্গবন্ধু হত্যার পর একটা বিষয় স্পষ্ট হয়েছে- নতুন গজিয়ে ওঠা বিত্তবান ছেলেমেয়েরা দেশে থাকেনি। তারা স্কুল করেছে ইংরেজি মাধ্যমে বা বিদেশি সিলেবাসে। গন্তব্য বিদেশ। লক্ষ্য বৈষয়িক সমৃদ্ধি।
মজার ব্যাপার, এ প্রবণতা শুধু নগরকেন্দ্রিক এলিট শ্রেণির নয়, মফস্বল শহর, এমনকি গ্রামের সম্পন্ন কৃষক বা ব্যবসায়ীও তার সন্তানকে বিদেশেই পাঠাচ্ছেন। শিক্ষার পণ্যায়ন ঘটে যাওয়ায় মানসম্পন্ন শিক্ষায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রবেশগম্যতা নেই। এরপরও যারা বুয়েট বা মেডিকেলে ভালো করছে, তারাও চলে যাচ্ছে বিদেশে। অবশিষ্ট ভালো ছাত্রছাত্রীর জন্য শিক্ষার বিশ্বজনীন মান অক্ষুণ্ন থাক, এটা ’৭৫-পরবর্তী শাসকরা চাননি। প্রায় ৩ দশকজুড়ে দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার পরিবেশকে রাষ্ট্রের উদাসীনতায় নষ্ট করা হয়েছে।
নকল, সন্ত্রাস ও ভোগসর্বস্ব একটা জনগোষ্ঠী তৈরি করতে পারলে শাসকের সুবিধা হয়। কারণ এদের দেশপ্রেম, নীতি-নৈতিকতা থাকে না। এর সঙ্গে জ্ঞানের চর্চাও কমে আসে। দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি যে শিক্ষাকে পুষ্ট করে তাকেও নষ্ট করা হলো। সংস্কৃতি অনুশীলন নাকি ধর্মহীনতার চক্রান্ত। হেন অপরাধ নেই যা প্রকাশ্যে করা হয় না-তাতে ধর্ম যায় না। শুধু দেশীয় সংস্কৃতির শেকড় সন্ধানেই নাকি সব সর্বনাশ! কী অদ্ভুত ষড়যন্ত্রের সমীকরণ। সবাই চেয়ে চেয়ে দেখেছে।
সমাজে লেখাপড়ার কদর কমেছে। সৎ মানুষের জায়গা ক্রমশ ছোট হয়ে এসেছে। ঘুসখোর নিজেকে লুকিয়ে রাখত। এখন সে দম্ভভরে তা বলে বেড়ায়। টাকা আছে বলে সবখানে তার কদর। ভালো মানুষকে সবাই করুণা করে। মনে মনে ভাবে, বেচারা বড় কষ্টে আছে।
দেখা যায়, পাশাপাশি দুটি ছেলে বড় হয়েছে, একজন দিনরাত পড়াশোনা করল, অনেক ভালো ফলও পেল। এই শ্রেণির বড় অংশই সাধারণ মানের চাকরিতে গেল। কিন্তু পাশের যে ছেলেটি লেখাপড়ায় ভালো ছিল না; গানবাজনা, খেলাধুলা বা কারিগরি দক্ষতা কোনোখানেই তার মনোযোগ ছিল না; হঠাৎ তাকে দেখা গেল সে বিত্তবৈভবে ফুলেফেঁপে উঠেছে।
আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপের মতো। অনেকে ভাববেন, নিশ্চয়ই রাজনীতির অসৎ গলিতে তার আনাগোনা ছিল। কিছুসংখ্যকের হয়তো তাই। কিন্তু অনেকের তা-ও নয়। কীভাবে, কোন ব্যবসার সূত্রে সে এত টাকার মালিক হয়ে গেল, কেউ বলতে পারে না। পাশের বাড়ির ভালো ছেলেটার মতো দশজনকে সে অনায়াসেই চাকরি দিতে পারে। নিজের সন্তানকে ভালো শিক্ষা, সুচিকিৎসার গ্যারান্টিও দিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে ভালো ছেলে, ভালো মানুষের চাহিদা সমাজে বাড়বে কীভাবে?
আগে বিশ্ববিদ্যালয় ছিল হাতেগোনা কয়েকটি। এখন দেড় শতাধিক। ছাত্র সংখ্যা বিশাল। শিক্ষার্থীর মান নিয়ে আগেই আলোচনা করেছি। এ জন্য ছেলেমেয়েদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। কারণ আমরা হাজার হাজার প্রতিষ্ঠান খুলেছি। ব্যবসা হয়েছে। লেখাপড়া সবখানে হয়নি। সুযোগও ছিল না। এখন যেসব ভালো ছেলে দেশে থাকে, তারা ব্যবসা করতেই বেশি আগ্রহী। এরপর লোভনীয় সরকারি চাকরি। যেখানে ক্ষমতা, বিত্ত ও কর্তৃত্বের হাতছানি। শিক্ষকতা শেষ আশ্রয়।
তাহলে ভালো শিক্ষক গড়ে উঠবে কীভাবে? এও ভাবতে হবে-অবক্ষয়িত সমাজে শিক্ষা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়। যে বিষয়ে কোনো তর্ক নেই তা হলো, যিনি উপাচার্য বা শিক্ষা প্রশাসনের অভিভাবক হবেন, তার অ্যাকাডেমিক পটভূমি বা নেতৃত্বের সক্ষমতা হবে প্রশ্নাতীত। কিন্তু দেখতে হবে তিনি কি তার কর্মক্ষেত্রে ভালোভাবে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন? সমস্যা তৈরি হয় চারপাশে।
সমাজ, রাজনীতি, এমনকি প্রশাসনিক কাঠামো-সবখানেই সংকটের পদধ্বনি। সবাই সমালোচনা করেন। কিন্তু এমন বৈরী পরিবেশে সমস্যা সমাধান করে কজন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছেন? সবচেয়ে বড় কথা, শিক্ষার্থীদের উসকে দেওয়া খুবই বিপজ্জনক।
সংগঠিত কোনো আন্দোলনকে উত্তেজিত করলে একপর্যায়ে অনেক অনৈতিক দাবিও সংগঠিত রূপ পেয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে তা আইনের শাসনকে অবজ্ঞা করবে, নৈরাজ্য সৃষ্টি হতে পারে এবং তা ভবিষ্যতে কারও জন্যই ভালো হয় না। অতীতেও দেখা গেছে, সহিংস ছাত্র বিক্ষোভের মুখে উপাচার্যরা পড়েছেন। সেখানে জানমালের ক্ষতি হলে তার দায়ও পড়ে পুলিশ বা উপাচার্যের ওপর। নিষ্ক্রিয় থাকলেও বিপদ, সক্রিয় হলেও সমস্যা।
নিজ দেশের কোনো প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলার বিষয়টিকেও উপেক্ষা করা যায় না। বিশ্ববিদ্যালয়ে একের পর এক উপাচার্য বদলেছে। কী পরিবর্তন এসেছে সেখানে? কিছু ব্যতিক্রম বাদে পরিস্থিতিতে তেমন কোনো বদল আসেনি। জনতুষ্টির রাজনীতি করলে শিক্ষার্থীর লাভ হয় না। সত্যি কথা হলো-আমরা রাষ্ট্র, সরকার কিংবা ব্যবস্থা-কোথাও আস্থা রাখতে পারছি না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা সার্চ কমিটি-আমরা কি মনেপ্রাণে তা মেনে নিতে প্রস্তুত আছি? আসলে দৃষ্টিভঙ্গিতেই অবিশ্বাসের মেঘ।
বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভূত সাম্প্রতিক ঘটনাবলি অবশ্যই উদ্বেগজনক। তবে তা বিচ্ছিন্নভাবে দেখা ঠিক হবে না। বিদ্যমান সমাজ ও রাষ্ট্রের চরিত্রকে আমলে নিতে হবে। শিক্ষক বা উপাচার্যই শুধু জোটবদ্ধ হচ্ছেন, তা নয়। অপ্রচলিতভাবে রাষ্ট্রের শৃঙ্খলাবদ্ধ পেশাজীবী, জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠান, শ্রমিক, ব্যবসায়ী, এমনকি অবসরপ্রাপ্ত-সবাই জোটবদ্ধ হচ্ছে। বার্তাটিও বুঝতে হবে বিভিন্ন মাত্রা থেকে। দেশের অনেক প্রতিষ্ঠানই কাঙ্ক্ষিত মান হারাচ্ছে। শিক্ষা এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হতে পারে না।
শিক্ষার্থীর ওপর বলপ্রয়োগ, বিশেষ করে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ অনাকাঙ্ক্ষিত, অন্যদিকে একজন শিক্ষককে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অবরুদ্ধ রাখাও কোনো মানদণ্ডে গ্রাহ্য হতে পারে না। সহিষ্ণুতা ও দায়িত্বশীলতার অভাব তীব্রভাবে অনুমিত হচ্ছে। জনসংখ্যা বেড়েছে। শিক্ষার্থীর আকার অনেক রাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার চেয়েও বেশি।
এখানে ভাগ্যবান সুবিধাভোগীরা লেখাপড়া করে না। কাজেই পড়ানোর ক্ষেত্রেও আপস হয়েছে। শুধু এখানে নয়, সবখানেই এ নতুন রসায়ন। চাহিদার দ্বন্দ্ব থাকবেই। তবে দেশ আমাদের সবার। এমন কথা বা কাজকে উৎসাহ দেওয়া যায় না, যা সমাধানের পথ দেখায় না; বরং সংকটকেই ঘনীভূত করে।
অমিত রায় চৌধুরী : সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ