শিল্পী সমিতির কার্যনির্বাহী পদ থেকে পদত্যাগ করলেন রোজিনা

বিনোদন প্রতিবেদক

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে চিত্রনায়ক জায়েদ খান ও চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তারের আইনি লড়াইয়ের মাঝেই সমিতির কার্যনির্বাহী পদ থেকে পদত্যাগ করলেন আশির দশকের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা রোজিনা। এবারের নির্বাচনে তিনি মিশা-জায়েদ প্যানেল থেকে ১৮৫ ভোট পেয়ে এই পদে বিজয়ী হয়েছিলেন।

বৃহস্পতিবার বিকালে শিল্পী সমিতির ই-মেইলে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন রোজিনা। এর আগে একই দিন সকালে তিনি সশরীরে এফডিসিতে অবস্থিত শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে গিয়েছিলেন পদত্যাগপত্র জমা দিতে। কিন্তু সে সময় সমিতিতে কাউকে পাননি বলে দাবি করেন এই নায়িকা। এরপর বাসায় গিয়ে ই-মেইলে পদত্যাগপত্র পাঠান বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন রোজিনা।

universel cardiac hospital

কিন্তু কেন পদত্যাগ করলেন জৌষ্ঠ এই অভিনেত্রী? এ সম্পর্কে জানতে যোগযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগত নানা কাজে ব্যস্ত। তাই শিল্পী সমিতির কোনো কাজে ভবিষ্যতে সময় দেওয়া সম্ভব হবে না। এ জন্যই পদত্যাগ করেছি। বিষয়টি আমি নতুন সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন সাহেবকেও বুঝিয়ে বলেছি। আপাতত এ বিষয়ে আর কিছু বলতে চাই না।

তিনি বলেন, কাঞ্চন ভাই আমাকে ফোনে জানিয়েছিলেন, সমিতির তিনটি মিটিংয়ে কেউ টানা অনুপস্থিত থাকলে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। ভেবে দেখলাম, আমি তো ঠিকঠাক সময় দিতে পারব না। কারণ, ঢাকা-লন্ডন মিলে দুইটা বাড়ি। তাই আমি সবসময় মিটিংয়ে থাকতে পারব না। তখন আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলো। তার চেয়ে সরে আসাই ভালো মনে করেছি।

এর আগের কমিটিতেও আপনি কার্যকরী পরিষদের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। তখন কোনো সমস্যা হয়নি? এ প্রশ্নের জবাবে রোজিনা বলেন, তখন আমি ওই কমিটিকে বলেছিলাম ঠিকমতো সময় দিতে পারব না। তারা সেটা মেনে নিয়েছিল। তাই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে রাজি হয়েছিলাম। তাদের কথা ছিল, কমিটিতে জ্যেষ্ঠ তারকা শিল্পীরা থাকলে ভালো হয়।

যদিও এফডিসির অন্দরে ফিসফাস, ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেননি রোজিনা। ফলাফল ঘোষণার পরের দিন থেকে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে জায়েদ খান এবং নিপুণ আক্তার যে লড়াইয়ে লিপ্ত হয়েছেন, তাতে বিরক্ত তিনি। সে কারণেই পদত্যাগ করেছেন। মিশা-জায়েদ প্যানেল থেকে আরও কয়েকজন জয়ী সদস্য পদত্যাগ করতে পারেন বলে গুঞ্জন।

উঠে এসেছে চিত্রনায়ক মাসুম পারভেজ রুবেলের নাম। তিনি এবার সহসভাপতি পদে বিজয়ী হয়েছেন। গতকাল সকালে একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে বিরক্তি প্রকাশ করেন এই অভিনেতা-প্রযোজক। দেন পদত্যাগের ইঙ্গিতও। রুবেল বলেন, শিল্পী সমিতির নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে যে কাদা-ছোড়াছুড়ি, তা শিল্পীদের বিব্রত করছে। মানুষ আমাদের নিয়ে হাসাহাসি করছে। চেষ্টা করব আর কখনো এফডিসিতে না যেতে।

তিনি আরও বলেন, অনেকবার নির্বাচন করে আমার ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছে। সেসব নির্বাচনে যা দেখেছি, সেই তুলনায় এবারের নির্বাচনের মতো এমন নোংরামি কোনো দিনও দেখিনি। আমি কখনো নোংরা পলিটিকসের মধ্যে যাইনি। জীবনে কারও সঙ্গে বেয়াদবি করিনি। কিন্তু এখন একে অন্যকে উদ্দেশ্য করে যা তা বলা হচ্ছে। এসব নোংরামির মধ্যে আমি নেই।

রুবেলের এমন বক্তব্যের পরই সামনে এলো রোজিনার পদত্যাগের খবর। এর আগে ২০১৯-২১ মেয়াদের নির্বাচনেও এই নায়িকা মিশা-জায়েদ প্যানেল থেকে কার্যনির্বাহী পদে বিজয়ী হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। তবে এবার দায়িত্ব শুরুর আগেই করলেন পদত্যাগ। তার মতো সিনিয়র একজন অভিনেত্রীর পদত্যাগের মধ্য দিয়ে শিল্পী সমিতির চলমান বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ হলো বলে মনে করছেন চলচ্চিত্রজনরা।

শেয়ার করুন