ভারতের কিংবদন্তী সুরকার ও সংগীতশিল্পী বাপ্পী লাহিড়ী মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টায় মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ১৯৫২ সালে ভারতে জন্ম নেওয়া এই শিল্পীর মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর।
গত বছরের এপ্রিলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। বাপ্পী লাহিড়ীর মৃত্যুতে সর্বস্তরের জনগণ শোক প্রকাশ করেছেন।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী এবং রাজনীতিক অমিত শাহ পৃথক পৃথক টুইটে শোকবার্তা প্রকাশ করেছেন।
জলপাইগুড়িতে জন্ম নেওয়া এই গুণীশিল্পী ছোটবেলা থেকেই বেড়ে ওঠেন সাংস্কৃতিক পরিবেশে। তার বাবা অপরেশ লাহিড়ী ও মা বাঁশরী লাহিড়ী দুজনেই ছিলেন সঙ্গীত অঙ্গনের। মা-বাবার কাছেই তার সংগীতের হাতেখড়ি। কিংবদন্তী শিল্পী কিশোর কুমার সম্পর্কে তার মামা ছিলেন। মা-বাবার দেওয়া নাম অলোকেশ হলেও জনপ্রিয়তা পান বাপ্পী নামে।
১৯৭০ থেকে ৮০ এর দশকে হিন্দি চলচ্চিত্রের গানের অন্যতম প্লেব্যাক শিল্পী ছিলেন বাপ্পী লাহিড়ী। ১৯৭৩ সালে ‘নানহা শিকারী’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সংগীত জগতে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি।
এরপর একে একে উপহার দিয়েছেন অসংখ্য গান। বলিউডে ডিস্কো ধারার গানে দিয়েছেন অনন্য মাত্রা। ‘ডিস্কো ডান্সার’,’নামাক হালাল’,’মাস্টারজি;’ ’কমান্ডো’ প্রমুখ চলচ্চিত্রে তার গাওয়া গানগুলো কালজয়ী হয়ে আছে।
হিন্দির পাশাপাশি বাংলাতেও গেয়েছেন অনেক গান। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘আমার সঙ্গী’,’আশা ও ভালোবাসা’,’আমার তুমি’,’বদনাম’ প্রমুখ। যার ফলে বাংলা ভাষাভাষী মানুষের কাছেও বাপ্পী লাহিড়ী ছিলেন প্রিয় মুখ। হিন্দি,বাংলা, তামিল ও তেলেগু ভাষা মিলিয়ে তিনি প্রায় ১২৯টি চলচ্চিত্রের গানে কন্ঠ দিয়েছেন। তিনি সর্বশেষ ‘বাঘী ৩’ চলচ্চিত্রে ‘ভাঙ্কাস’ শিরোনামে গানটিতে কণ্ঠ দেন।
সংগীতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখায় তিনি পান বেশ কিছু পুরস্কার ও সম্মাননা। এর মধ্যে ১৯৮৫ সালে শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে ফিল্মফেয়ার এওয়ার্ডস অর্জন করেন।
সঙ্গীত অঙ্গনের পাশাপাশি বাপ্পী লাহিড়ী রাজনীতিতেও যুক্ত ছিলেন। ২০১৪ সালে তিনি ভারত জনতা পার্টিতে (বিজেপি) যুক্ত হন।