ইউরোপে সবচেয়ে বড় যুদ্ধের পরিকল্পনা করছে রাশিয়া: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বরিস জনসন
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন - ছবি: এএফপি

১৯৪৫ সালের পর ইউরোপে ‘সবচেয়ে বড় যুদ্ধের’ পরিকল্পনা করছে রাশিয়া। তারা যে এমন পরিকল্পনা করছে সেই প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে সতর্ক করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।

বিবিসিকে দেওয়া এক স্বাক্ষাতকারে বরিস জনসন বলেন, সব ইঙ্গিত থেকে এটাই মনে হচ্ছে যে, তাদের পরিকল্পনা ইতোমধ্যে হয়তো কিছুক্ষেত্রে শুরু হয়ে গেছে।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন যে, রাশিয়া আক্রমণ শুরু করতে চায়। তারা ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভকে ঘিরে ফেলার পরিকল্পনা করছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ১ লাখ ৬৯ হাজার থেকে ১ লাখ ৯০ হাজারের মতো সেনা ইউক্রেন সীমান্তে মোতায়েন রেখেছে রাশিয়া।

পশ্চিমা কর্মকর্তা গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই সতর্ক করছে যে, রাশিয়া হামলা চালানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে হামলার পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করেছে মস্কো। তাদের দাবি সীমান্তে সামরিক মহড়ায় অংশ নিয়েছে সেনা। এটা যুদ্ধের প্রস্তুতি নয়।

এদিকে ইউক্রেনের স্বরাষ্টমন্ত্রী ডেনিস মোনাস্টিরস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়া যেকোনো সময় হামলা চালাতে পারে এমন আশঙ্কা থেকেই ইউক্রেনের সেনারা প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।

তিনি বলেন, আমরা সেনাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা প্রত্যেকেই অবিশ্বাস্য সাহসিকতার সঙ্গে প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রত্যেকেই যেকোনো ধরনের অবস্থার জন্য প্রস্তত।

এদিকে শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেনের কমপক্ষে দুই সেনার মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ওই সেনা নিহত হওয়ার ঘটনায় রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দিকে অভিযোগ তুলেছে ইউক্রেন। বিদ্রোহীদের হামলা আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ইউক্রেন সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, জনবহুল কেন্দ্রে কামানের গোলা ছুড়েছে বিদ্রোহী যোদ্ধারা। তারা তাদের আর্টিলারি সিস্টেম আবাসিক বাড়ি-ঘরের কাছে স্থাপন করেছে।

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, এভাবেই আমাদের শত্রুরা আমাদেরকে পাল্টা হামলার জন্য উসকে দিচ্ছে। বিদ্রোহীরা বেসামরিকদের ওপর কামানের গোলা ছুড়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। এর পেছনে রাশিয়ার হাত রয়েছে বলেও দাবি করা হয়। তবে রুশ সরকার সব ধরনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শনিবার জানিয়েছে, রুশপন্থি বিদ্রোহীরা ৭০ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। এর মধ্যে ৬০ বার ৮২ এবং ১২০ মিলিমিটার-ক্যালিবার কামানের গোলা ব্যবহার করা হয়। কিন্তু যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় এ ধরনের কামানের গোলা ব্যবহার নিষিদ্ধ।

দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেকসি রেজনিকোভ বলেন, কোনো ধরনের সহিংসতার পরিকল্পনা ইউক্রেনের নেই। তবে ইউক্রেন, এর সেনাবাহিনী এবং বেসামরিক বসতিতে কারও হামলা তারা মেনে নেবে না। এর উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। সে কারণেই সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলয়ায় প্রস্তুতি নিচ্ছে তাদের সেনারা।

শেয়ার করুন