বরেণ্য কবি ও রাজনীতিবিদ কাজী রোজীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এবং ‘মত ও পথ’ সম্পাদক যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।।
আজ রোববার সকালে এক শোকবার্তায় তিনি মরহুমার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
শোকবার্তায় মোকতাদির চৌধুরী বলেন, কাজী রোজী ছিলেন একজন দেশপ্রেমিক সাহিত্যিক ও প্রগতিশীল রাজনীতিক। তিনি সবসময় স্বাধীনতাবিরোধি অপশক্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। দেশের মানুষ জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানকে সবসময় শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।
মোকতাদির চৌধুরী আরও বলেন, রোজী আপার সঙ্গে আমাদের পারিবারিকভাবেও হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। তাঁর মৃত্যুর সংবাদ আমাদেরকে গভীরভাবে শোকাহত করেছে। আমরা তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনার পাশাপাশি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
এদিকে কাজী রোজীর মৃত্যুতে পৃথক শোকবার্তায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজার ও মত ও পথের নির্বাহী সম্পাদক প্রফেসর ফাহিমা খাতুন।
উল্লেখ, ২১ দিন করোনার সঙ্গে লড়ে শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত মধ্যরাতে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন বরেণ্য কবি ও রাজনীতিবিদ কাজী রোজী।
কিডনিতে ইনফেকশনসহ নানান শারীরিক জটিলতা নিয়ে গত ৩০ জানুয়ারি রাজধানীর একটি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়। কোভিড পজিটিভ হওয়ায় তাকে আইসোলেশন ইউনিটের আইসিইউতে রাখা হয়েছিল।
কাজী রোজী ১৯৪৯ সালের ১ জানুয়ারি সাতক্ষীরায় জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন।
গত শতাব্দির ষাটের দশকে কবিতা লেখা শুরু করেছিলেন কাজী রোজী। তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলো হলো— ‘লড়াই’, ‘পথঘাট মানুষের নাম’, ‘আমার পিরানের কোনো মাপ নেই’ প্রভৃতি। কবিতায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৮ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ও ২০২১ সালের বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন।
কবিতা চর্চা ছাড়াও তিনি সরকারি চাকরিজীবী ছিলেন, ২০০৭ সালে তথ্য অধিদফরের একজন কর্মকর্তা হিসেবে অবসর নেন। পরে রাজনীতিতে সক্রিয় হন এবং ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাতক্ষীরা জেলার জন্য নির্ধারিত সংরক্ষিত নারী আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তিনি যুদ্ধাপরাধী ও তৎকালীন জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিবিদ আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের চতুর্থ সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য প্রদান করেন।