সংসদে পাস হওয়া ‘ব্যাংকার বহি সাক্ষ্য আইন-২০২১’ পরিপালনে ব্যাংক বর্হিভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে (এনবিএফআই) নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন এ আইনে এনবিএফআইয়ের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী অনুমোদিত ব্যক্তি ছাড়া অন্য কারো কাছে কোনো গ্রাহকের তথ্য প্রকাশ করলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। এ আইনের অধীন অপরাধ অ-আমলযোগ্য, জামিনযোগ্য ও আদালতের সম্মতিতে আপসযোগ্য হবে বলে বিধান রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করে রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) এনবিএফআইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছে। এর আগে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য একই নির্দেশনা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সার্কুলারে ‘ব্যাংকার্স বুকস এভিডেন্স অ্যাক্ট-১৮৯১’ রহিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে গত ২৭ নভেম্বর জাতীয় সংসদে পাস হওয়া ‘ব্যাংকার বহি সাক্ষ্য আইন-২০২১’ গত ৭ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এনবিএফআইগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ব্যাংকের লেজার বুক, ক্যাশ বুকের মতো নথিকে আইনের ভাষায় ‘সাক্ষ্য বহি’ বলা হয়। বিলে ডিজিটাল পদ্ধতিতে যেসব রেকর্ড হবে সেগুলোও ‘সাক্ষ্য বহি’ হিসেবে আইনে বিবেচিত হবে। ব্যাংকগুলোর লেজার বুক, ক্যাশ বুক, লোন ডেসপাস বুক যা আছে- সবই এর অন্তর্ভুক্ত হবে।
বিলে বলা হয়েছে, আইনে বর্ণিত কারণ ছাড়া কোনো ব্যাংক কর্মকর্তা বা কর্মচারী কোনো গ্রাহকের তথ্য প্রকাশ করলে তার সর্বোচ্চ তিন বছরের জেল ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা হবে। এ আইনের অধীন অপরাধ অ-আমলযোগ্য, জামিনযোগ্য ও আদালতের সম্মতিতে আপসযোগ্য হবে বলে বিধান রাখা হয়েছে।
কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে গ্রাহকের তথ্য দিতে পারবে না তা উল্লেখ করে আইনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক বা তাদের অনুমোদিত বা নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটসহ মানিলন্ডারিং অপরাধে তদন্তকারী যেকোনো সংস্থা চাইলে গ্রাহকের তথ্য নিতে পারবে। এছাড়া ব্যাংককে সেবা দেওয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ আইনজীবী, পরামর্শক বা উপদেষ্টা ছাড়া অন্য কারও কাছে তথ্য প্রকাশ করা যাবে না।
আইনে আউটসোর্সিং ব্যবস্থার আওতায় ব্যাংকিং বা অনুষঙ্গ কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে সীমিত আকারে তথ্য প্রকাশ করা যাবে। ব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত নয় এমন কোনো সেবাদানকারী তৃতীয় পক্ষের কাছেও তথ্য প্রকাশ করা যাবে। এক্ষেত্রে কোনো গ্রাহকের আমানতের তথ্য প্রকাশ করতে হলে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের সম্মতি নিতে হবে। ঋণের তথ্য প্রকাশের আগে গ্রাহককে এ বিষয়ে জানাতে হবে।