প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘোষণার পর ইউক্রেনে সামরিক অভিযানে নেমেছে রাশিয়ান সেনাবাহিনী। ইউক্রেনের তিন দিক থেকে রুশ স্থল বাহিনী দেশটিতে ঢুকে পড়েছে।
রাশিয়ান সেনারা হামলা শুরুর পর ইউক্রেনের ৪০ সেনাসদস্য এবং অন্তত ১০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রশাসনিক সহকারী ওলেকসি আরেস্টোভিচ।
বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলে সেনা অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দেন। এরপর থেকে ইউক্রেনের বিভিন্ন জায়গায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে বলে খবর আসে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে।
অন্যদিকে মস্কো সমর্থিত বিদ্রোহীদের হামলা প্রতিহত করার সময় অন্তত ৫০ জন রুশ দখলদার নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ইউক্রেন সেনাবাহিনী। রাশিয়ার স্থল বাহিনী বিভিন্ন দিক থেকে ইউক্রেনে প্রবেশের কয়েক ঘণ্টা পর এই ঘোষণা দেয় কিয়েভ। যদিও নিহতের সংখ্যা যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, ইউক্রেনের বিমান ঘাঁটি ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে নির্ভুল অস্ত্র দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। অপরদিকে ইউক্রেনের দাবি, দেশটির পূর্বাঞ্চলে পাঁচটি রুশ বিমান ও হেলিকপ্টার ভূপাতিত করেছে তারা।
রুশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আজভ সাগরে থাকা তাদের দুটি বেসামরিক জাহাজে ইউক্রেনের সেনারা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। রুশ সিকিউরিটি সার্ভিস এফএসবি জানায়, ইউক্রেনের বন্দর নগরী ম্যারিউপোল থেকে এই হামলা চালানো হয়।
আক্রান্ত দুটি জাহাজের একটি হলো তেলবাহী এসজিভি-ফ্লট এবং অপরটি হলো সেরাফিম সারোভস্কি নামে সাধারণ কার্গো জাহাজ। ওই ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় জাহাজের এক নাবিক গুরুতর আহত হয়েছেন, তার অবস্থা গুরুতর। হামলায় জাহাজ দুটিতে আগুন ধরে যায়।
ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান এক টুইটে বলেছেন, দখলদার ৫০ রুশ নিহত হয়েছেন। ক্রামাটোরস্ক জেলায় রাশিয়ার আরও একটি বিমান ভূপাতিত করা হয়েছে। এ নিয়ে ছয়টি বিমান ভূপাতিত হলো।
ইউক্রেনের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বরাতে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, রুশ বাহিনী কিয়েভ অঞ্চলের উত্তরে ঢুকে পড়েছে। কিয়েভের ওপর দিয়ে নিচু হয়ে বেশ কয়েকটি হেলিকপ্টার উড়তে দেখেছেন কিয়েভের উত্তর অংশে অবস্থানরত এএফপির এক প্রতিবেদক। সেখানকার একটি বিমানবন্দরও রুশ বাহিনী দখল নেওয়ার খবর এসেছে।
ন্যাটো এক বিবৃতিতে রাশিয়ার আক্রমণের মধ্যে পূর্ব ইউরোপে স্থল এবং বিমান বাহিনী বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। পশ্চিমা সামরিক জোটটি জানায়, রাশিয়ার কর্মকাণ্ড ইউরো-আটলান্টিক নিরাপত্তার জন্য বিরাট হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সব মিত্রদেশগুলোর নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষার জন্য ন্যাটো প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নেবে। ন্যাটো অতিরিক্ত স্থল এবং বিমান বাহিনী মোতায়েনের পাশাপাশি নৌবাহিনীও মোতায়েন করতে যাচ্ছে। সশস্ত্র বাহিনীর তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। রাশিয়ার আক্রমণকে অন্যায্য এবং অনর্থকহিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে।