পোশাক রপ্তানিতে ভিয়েতনামকে পেছনে ফেলল বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

লকডাউনে পোশাক কারখানা
ফাইল ছবি

তৈরি পোশাকের বিশ্ববাজারে দীর্ঘ সময় ধরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’। যদিও গত দেড় থেকে দুই বছরে বাংলাদেশকে ব্যাপক প্রতিযোগিতার মুখে ফেলেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ভিয়েতনাম। বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও ভিয়েতনামের ট্রেড প্রমোশন কাউন্সিলের (ভিয়েট্রেড) তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০২১ সালে বিশ্ববাজারে ৩ হাজার ৫৮০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ । একই বছরে পোশাক শিল্পের বিশ্ববাণিজ্যে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান প্রতিযোগী রাষ্ট্র ভিয়েতনামের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ১০৮ কোটি ডলার। সে হিসাবে ২০২১ সাল শেষে ভিয়েতনামের চেয়ে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৪৭২ কোটি ডলার মূল্যের।

এর মাধ্যমে ভিয়েতনামকে পেছনে ফেলে আবারও পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয় অবস্থানের স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তবে রপ্তানিতে দ্বিতীয় অবস্থানের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেতে আরও ৪ মাস অপেক্ষা করতে হবে।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) পরবর্তী প্রতিবেদন প্রকাশের মধ্য দিয়ে আগামী জুনে আনুষ্ঠানিক এ স্বীকৃতি পাবে বাংলাদেশ। ডব্লিউটিও সদস্য দেশগুলোর রপ্তানি বাণিজ্যের বিশ্লেষণ নিয়ে প্রতিবছর জুনে এ ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে।

এর আগে ২০২০ সালে বাংলাদেশের চেয়ে ১০০ কোটি ডলার মূল্যের বেশি পোশাক রপ্তানি করে এগিয়ে যায় ভিয়েতনাম। ওই বছরে বাংলাদেশ ভিয়েতনামের কাছে দ্বিতীয় প্রধান পোশাক রপ্তানিকারক দেশের মর্যাদা হারায়। ডব্লিউটিওর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৮০০ কোটি ডলার আর ভিয়েতনামের পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিলো ২ হাজার ৯০০ কোটি ডলার।

পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা বলছেন, করোনার কারণে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানা ৬৫ দিন বন্ধ ছিলো। এ কারণে রপ্তানি আদেশও বন্ধ হয়ে যায়। আর এ সুযোগ কাজে লাগায় ভিয়েতনাম, রপ্তানিতে তারা বাংলাদেশকে টপকে দ্বিতীয় অবস্থানটি দখলে নেয়। উদ্যোক্তারা বলছেন, এখন আবারও বিশ্ববাজারে চাহিদা বাড়ছে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের।

এ বিষয়ে তৈরি পোশাক শিল্প মালিক ও রপ্তানিকারক সমিতি-বিজিএমইএ’র পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল জাগো নিউজকে বলেন, পোশাক খাতের রপ্তানির ইতিবাচক ধারা লক্ষ্য করা গেলেও অনেক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। বিভিন্ন কাঁচামাল যেমন- টেক্সটাইল, পণ্য জাহাজীকরণ খরচ, রং ও রাসায়নিক দ্রব্যের বাজার অনেক চড়া। পণ্য উৎপাদন খরচ বাড়ার অনুপাতে পোশাকের দাম সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে বাড়ছে না। তবে সুযোগ আরও বেশি কাজে লাগাতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সাপ্লাই চেইন ঠিক রেখে সক্ষমতা বাড়ানো। এটা করতে পারলে আগামীতে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প নেতৃত্ব দেবে।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন-বিকেএমইএ’র সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, করোনা মহামারি চ্যালেঞ্জ ভালোভাবে মোকাবিলা করায় আমাদের রপ্তানি বেড়েছে। এখন মাসে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। রপ্তানির এ ঊর্ধ্বমুখী ধারা আরও বাড়াতে বেশকিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। তবে অবশ্যই সার্ভিস ও কোয়ালিটি দিয়ে সিংহভাগ অর্ডার দেশে রাখতে পারব বলে আমার বিশ্বাস।

শেয়ার করুন