১৪ হাজার বাঙালি পুলিশ সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের সদস্যরা পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। এর ফলে সূচিত হয়েছিল মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পুলিশ বাহিনীর প্রায় ১৪ হাজার বাঙালি পুলিশ সদস্য কর্মস্থল ত্যাগ করে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এদের মধ্যে ১ হাজার ১০০ জনেরও বেশি পুলিশ সদস্য শহীদ হন।

তিনি বলেন, আমি মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং দেশের বিভিন্ন ক্রান্তিলগ্নে আত্মাৎসর্গকারী সব পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা ও শ্রদ্ধা জানাই।

রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ৪৭তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে একথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ৪৭তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশসহ বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সব সদস্যকে শুভেচ্ছা জানাই।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে বাংলাদেশ পুলিশকে আধুনিক ও জনবান্ধব করে গড়ে তুলতে বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে। আমরা ধাপে ধাপে পুলিশের জনবল বৃদ্ধি করেছি। আমাদের সরকার থানা, ফাঁড়ি, তদন্ত কেন্দ্র, ব্যারাক, আবাসিক ভবন নির্মাণের জন্য জমি বরাদ্দসহ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা সেবার লক্ষ্যে ১০ তলা বিল্ডিং করে রাজারবাগে পুলিশ হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে পুলিশ সদস্যরা চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন। প্রতি বিভাগে একটা করে হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। আকাশ পথে সক্ষমতা অর্জনের মাধ্যমে পুলিশের গতিশীলতা ত্রিমাত্রিক পর্যায়ে উন্নীতকরণের জন্য ইতোমধ্যে রাশিয়া থেকে ২টি হেলিকপ্টার কেনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জঙ্গি ও সন্ত্রাস নির্মূলে আমরা পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট এবং কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট গঠন করেছি। বাংলাদেশ পুলিশে নতুন পদ সৃষ্টির মাধ্যমে পুলিশ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি প্রাপ্তির জটিলতা নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। বাংলাদেশ পুলিশের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। জনগণ ৯৯৯ ব্যবহার করে এখন খুব সহজেই ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স ও পুলিশের সেবা পাচ্ছে।

তিনি বলেন, আমাদের সরকার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে একটি আধুনিক, যুগোপযোগী ও দক্ষ বাহিনীতে উন্নীত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে আধুনিক সরঞ্জাম ও প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের সেবা করাই পুলিশ বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের পবিত্র দায়িত্ব। সেখানে কোনো ধরনের অনুরাগ বা বিরাগের সুযোগ নেই। দায়িত্ব অবহেলা বা নৈতিক পদস্খলন অমার্জনীয় অপরাধ। আমি আশা করি, বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা মানবিক মূল্যবোধ সমুন্নত রেখে দক্ষতা, পেশাদারত্ব ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন এবং জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবেন।

‌‘আমি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ৪৭তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।’

শেয়ার করুন