বাংলাদেশের মেগা প্রকল্পের মধ্যে রূপপুর নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ কেন্দ্র অন্যতম, যেখানে কাজ করছে রাশিয়ান কোম্পানি রোসাটোম। ওই কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে সমস্যায় পড়বে বাংলাদেশ।
ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালানোর কারণে রাশিয়ার ওপর বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে এবং এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে বলেন, ‘রোসাটোমের ওপর এখনও নিষেধাজ্ঞা হয়নি। রোসাটোমের ওপর যদি নিষেধাজ্ঞা আসে তবে দুশ্চিন্তার বিষয় হবে।’
তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার সম্পূর্ণ প্রভাব এখনও পরিষ্কার নয়। এগুলো আগামী কয়েকদিনের মধ্যে পরিষ্কার হবে। যদি অর্থনৈতিক লেনদেন নিউইয়র্ক দিয়ে পাঠাতে হয়, তবে অবশ্যই তাদের ওপর একটি প্রভাব পড়বে। কিন্তু এ পর্যন্ত আমরা যেটি ভাবছি, রূপপুরের ওপর সরাসরি প্রভাব পড়বে না।’
তবে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে আরও কিছু নিষেধাজ্ঞা আসবে এবং যদি নির্দিষ্ট কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আসে, সে ক্ষেত্রে হয়তো প্রভাব পড়তে পারে। রূপপুরের ক্ষেত্রে রোসাটোম বড় একটি ভূমিকা পালন করছে। রোসাটোমের ওপর যদি কোনও নিষেধাজ্ঞা আসে সেটি তখন আমাদের জন্য ঝামেলা তৈরি করবে। কিন্তু এই মুহূর্তে আমরা পর্যবেক্ষণ করছি, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কী প্রভাব পড়তে পারে।’
ইতোমধ্যে রাশিয়ান কোম্পানি গ্যাজপ্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে এবং এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পরিশোধ কীভাবে হবে বা কীভাবে হয় সেগুলো আমি ঠিক জানি না। তবে অর্থ পরিশোধ যদি নিউইয়র্কের মাধ্যমে হয়ে থাকে তাহলে তো সমস্যা হবেই ।’
একশত বাংলাদেশির সীমান্ত অতিক্রম
ইউক্রেনে অবস্থিত প্রায় এক হাজারের মতো বাংলাদেশির মধ্যে ১০০ পোল্যান্ড সীমান্ত অতিক্রম করেছে এবং অল্প কিছু রোমানিয়া সীমান্ত অতিক্রম করেছে।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে যে খবর আছে সেটি হচ্ছে, ১০০ জন বাংলোদেশি পোল্যান্ড সীমান্ত অতিক্রম করেছে এবং অনেকে আমাদের মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।’
রোববার আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা সীমান্ত অতিক্রম করেছে, তাদের কতজন ফেরত আসতে চায় এবং কতজন অপেক্ষা করতে চায়, এ বিষয়গুলো পরিষ্কার করে আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রাখবো।’
মোমেন বলেন, ‘রোমানিয়াতে কিছু গেছে। তবে বেশিরভাগ পোল্যান্ড সীমান্ত দিয়ে ঢুকবে বলে মনে হচ্ছে। কতজন ইউক্রেনে আছে আমাদের জানা নেই, তবে হাজারখানেক আছে বলে মনে হচ্ছে।’
বাংলাদেশের অবস্থান
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ব্যাখ্যা করা হয়েছে। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আমাদের ব্যাখ্যায় বলেছি যে, বিষয়টি নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা চাইবো, জাতিসংঘ চার্টার এবং ওই চার্টারের যে প্রিন্সিপ্যালগুলো আছে, সেগুলোকে যাতে সম্মান করা হয়। এছাড়া অবিলম্বে সব ধরনের বৈরী মনোভাব প্রদর্শন বন্ধ করার লক্ষ্যে আগামী সোমবার জাতিসংঘ সাধারণ অভিবেশনে জেনারেল ডিবেটে আমরা বক্তব্য রাখবো।’