ইউক্রেনের পারমাণবিক অস্ত্র ঠেকাতে রুশ অভিযান!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

রাশিয়া বরাবর বলে আসছে ইউক্রেনকে নিরস্ত্র করা তাদের অন্যতম উদ্দেশ্য। পশ্চিমাদের আলোচনার শর্তেও দেশটির প্রেসিডেন্ট পুতিন এটি জুড়ে দিয়ে রেখেছেন। এখন জানা যাচ্ছে, ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি পারমাণবিক অস্ত্র তার দেশে মজুদ করতে যাচ্ছিল। আর সেটি ঠেকাতেই ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ অভিযান।

রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সোইগু জানান, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান চালানোর প্রধান লক্ষ্য- পশ্চিমাদের তৈরি সামরিক হুমকি থেকে রাশিয়াকে রক্ষা করা।

universel cardiac hospital

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লেভরভকে উদ্ধৃত করে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থাগুলো জানায়, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের কিছু দেশ যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি পারমাণবিক অস্ত্র নিজ দেশে মজুদ করেছে। ইউক্রেনও তা-ই করতে যাচ্ছিল। তাদের এই উদ্যোগ থামাতে বিশেষ সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হুঁশিয়ার করেন, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দেশগুলোতে পশ্চিমা কোনো দেশ সামরিক স্থাপনা গড়তে পারবে না।

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৯১ সালে ভেঙে গিয়ে রাশিয়াসহ ১৫টি স্বাধীন রাষ্টের জন্ম হয়। অন্যগুলো হলো- ইউক্রেন, জর্জিয়া, বেলারুশ, উজবেকিস্তান, আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, মলদোভা, তুর্কমেনিস্তান, তাজিকিস্তান, লাটভিয়া, লিথুনিয়া ও এস্তোনিয়া। এর মধ্যে বেশির ভাগ দেশ পরে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগ দেয়। ইউক্রেনও সাম্প্রতিক সময়ে ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। সেই থেকে রাশিয়ার ক্ষোভ। দেশটি মনে করে ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দিলে তা রাশিয়ার জন্য হুমকির কারণ হবে।

এদিকে আজই ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি তার দেশের ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন ফরমে স্বাক্ষর করেছেন। ন্যাটাতে এটি পাঠানোর জন্য অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতাও সেরেছেন। ইউক্রেনকে জরুরি ভিত্তিতে সদস্য পদ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন জেলেনস্কি।

রাশিয়া মনে করছে, ইউক্রেন সামরিক স্থাপনা বানাচ্ছে ও পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে রাশিয়াকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শুরু থেকে ন্যাটোকে বলে আসছেন ইউক্রেন থেকে দূরে থাকার জন্য। ইউক্রেনকে হুঁশিয়ার করেছেন, ন্যাটোর বিষয়ে না এগোতে। কিন্তু দাবি পূরণ না হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে বিশেষ অভিযানের নির্দেশ দেন পুতিন।

ইউক্রেনে রুশ অভিযানের আজ ষষ্ঠ দিন। রাশিয়া ইতিমধ্যে ইউক্রেনের চারটি শহর দখলে নিলেও তারা যে লক্ষ্য নিয়ে এসেছিল সেটি এখনো অর্জন করতে পারেনি। তবে রাজধানী কিয়েভ ও দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে ইউক্রেনের সেনাদের সঙ্গে তুমুল লড়াই চলছে রুশ বাহিনীর। কিয়েভের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে রাশিয়ার ৪০ মাইল দীর্ঘ এক সামরিক বহর।

পশ্চিমা দেশগুলোর আশঙ্কা, যেকোনো সময় কিয়েভের দখল নিতে পারে রুশ বাহিনী।

আজ রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তারা যে লক্ষ্য নিয়ে ইউক্রেনে এসেছে সেই লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।

শেয়ার করুন