তাইওয়ানে বিদেশি হস্তক্ষেপ সহ্য করা হবে না: চীনের প্রধানমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং। ফাইল ছবি: রয়টার্স

চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, তাইওয়ানের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সম্পর্ক উন্নয়নের অঙ্গীকার করেছে চীন। তাইওয়ানে যেকোনো ধরনের বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মকাণ্ড ও বিদেশি হস্তক্ষেপের ঘটনা সহ্য করা হবে না।

শনিবার (৫ মার্চ) চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তাইওয়ানকে নিজেদের মূল ভূখণ্ডের অংশ মনে করে চীন। দ্বীপটিকে একীভূত করার কাজে গতি আনতে গত দুই বছরে তাইওয়ানের আশপাশে সামরিক কার্যক্রম জোরদার করেছে বেইজিং। বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিরোধ রয়েছে চীনের। কেননা গণতান্ত্রিক তাইওয়ানের অন্যতম আন্তর্জাতিক মিত্র ও অস্ত্র সরবরাহকারী হলো যুক্তরাষ্ট্র।

universel cardiac hospital

শনিবার চীনের পার্লামেন্টের বার্ষিক অধিবেশনের উদ্বোধনী বক্তৃতায় লি কেকিয়াং বলেন, বেইজিং বরাবর ‘এক চীন’ নীতি মেনে চলেছে। এর অর্থ, তাইওয়ান চীনের মূল ভূখণ্ডের অংশ। তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন ও একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শান্তিপূর্ণ উপায়ে বাস্তবায়ন করা হবে। তবে বিদেশি হস্তক্ষেপ ও বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যক্রম—কোনোটাই সহ্য করবে না চীন।

চীনের প্রধানমন্ত্রীর এমন ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় তাইওয়ানের মেইনল্যান্ড অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল এক বিবৃতিতে বলেছে, বেইজিংয়ের উচিত নিজেদের মানুষের উদ্বেগ কমানো ও গণতন্ত্রের উন্নয়নে বেশি মনোযোগ দেওয়া। তাইওয়ানের বেশির ভাগ মানুষ চীনের স্বৈরাচারী শাসন পছন্দ করেন না। তাঁরা চীনের চাপিয়ে দেওয়া যেকোনো রাজনৈতিক কাঠামো, সামরিক ভীতি ও কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগের বিরুদ্ধে। আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় তাইওয়ানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বলবৎ রাখা জরুরি।

কয়েক বছর ধরে তাইওয়ান নিয়ে একের পর এক হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করছেন চীনের নেতারা। প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের সর্বশেষ মন্তব্য এর ব্যতিক্রম নয়। এমনটাই মনে করছেন চীনের জিয়ামেন ইউনিভার্সিটির তাইওয়ান-বিষয়ক বিশেষজ্ঞ লিউ গুওশেন। তিনি বলেন, এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি যেটাই হোক না কেন, তাইওয়ান নিয়ে নিজেদের অবস্থানে অটুট রয়েছে চীন।

চলতি বছর সামরিক খাতে আগের বছরের তুলনায় বাজেট বরাদ্দ ৭ দশমিক ১ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং। শনিবার পার্লামেন্টে দেওয়া বক্তৃতায় জাতীয় বাজেট সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি এ কথা জানান। লি কেকিয়াং জানান, চীনের পরবর্তী জাতীয় বাজেটে সামরিক খাতে বরাদ্দ দাঁড়াবে ১ লাখ ৪৫ হাজার কোটি ইউয়ান বা ২২ হাজার ৯৪৭ কোটি ডলার। টানা সাত বছর ধরে দেশটির সামরিক ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে চীনের সামরিক বাহিনীর আগ্রাসী নীতি ক্রমেই প্রকাশিত হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

এ সময় লি কেকিয়াং আরও জানান, পরবর্তী জাতীয় বাজেটে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।

এ বিষয়ে জাপানের তাকুশোকু ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক তাকাশি কাওয়াকামি বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে চীনের সামরিক বাজেট বাড়ানোর ঘটনা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এর মধ্য দিয়ে এ অঞ্চলে অস্ত্র প্রতিযোগিতা তৈরি হতে পারে।

শেয়ার করুন