প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ’বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ দেশকে এগিয়ে নিতে এখনো জনগণকে অনুপ্রাণিত করছে।’ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদ্যাপন উপলক্ষে আজ সোমবার সকালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন। তিনি বলেন, ‘দেশকে এগিয়ে নিতে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ এখনো আমাদের অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘কেউ আর নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে বিভ্রান্ত করতে পারবে না। কারণ, প্রযুক্তিগত অগ্রগতির জন্য নতুন প্রজন্মের কাছে সবকিছুই এখন উন্মুক্ত।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আর কেউ বিকৃত করতে পারবে না। পারবে না তরুণ প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করতে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আজকের প্রজন্মের সামনে বিশ্ব আজ উন্মুক্ত। কাজেই তারা আর বিভ্রান্ত হতে পারে না। যদিও অতীতের সরকারগুলো ২১ বছর ধরে এটি করেছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে প্রযুক্তির যুগে তাদের (নতুন প্রজন্ম) অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া সম্ভব হবে না।’
বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আরও এগিয়ে যাবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির জনকের ৭ মার্চের ভাষণ লক্ষ্য অর্জনে সবাইকে উৎসাহিত করবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে বৈশ্বিক মন্দা ও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে তাঁর সরকার দেশের বাজারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বাজার মনিটরিং করছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে গেলে এখানেও সে প্রভাবটা পড়ে। আর কিছু সুবিধাভোগী শ্রেণি রয়েছে এই সুযোগটা নেওয়ার জন্য।’
তিনি বলেন, ‘এটা একটা অনাকাঙ্খিত ঘটনা, রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করেছে। যার কুফলটা আমরা ভোগ করছি। আমাদের এখানে কিছু জিনিসের দাম বাড়ছে কারণ, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে গেলে স্বাভাবিকভাবে এখানেও তার প্রভাবটা পড়ে।’
তিনি বলেন, ‘তাছাড়া কিছু লোক এখানে আছেই এই সংকটময় মুহূর্তে ব্যবসা করে তারা দু’পয়সা বেশি কামাই করতে চায়। সেখানে মনিটরিং আমরা করছি।’
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ উপলক্ষে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ও শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বক্তৃতা করেন।
আরো বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। এ ছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, শ্রম ও মানব সম্পদ সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ও এসএম মান্নানও বক্তৃতা করেন।
আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। বাজানো হয় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ।