যে গানের পূর্ণ রূপ বঙ্গবন্ধুর সম্মানে

হাসান শান্তনু

বাঙালির ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম মহানায়ক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মানে পূর্ণতা পায় গানটি। গানটি বঙ্গবন্ধুর প্রিয় গানগুলোরই একটি। শিরোনাম- ‘তোমার সমাধি ফুলে ফুলে ঢাকা, কে বলে আজ তুমি নাই, তুমি আছো মন বলে তাই…।’ নানা কালের শ্রোতার কাছে নন্দিত এ গানের শিল্পী শ্যামল মিত্র। ‘অন্তরাল’ সিনেমায় গানটি সংযোজিত হয়। সিনেমাটা মুক্তি পায় ১৯৬৫ সালে। সিনেমায় শুধু নয়, গানটিই তখন চার লাইনের ছিল।

মুক্তিযুদ্ধের পরের বছর রাষ্ট্রীয় আমন্ত্রণে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে অংশ নেন প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়, বরেণ্য শিল্পী শ্যামল মিত্র। তাঁদের দেখা হয় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে। বঙ্গবন্ধু ওই গান তাঁর প্রিয় জানিয়ে শ্যামল মিত্রকে বলেন, গানটির পূর্ণ রূপ দিতে। বঙ্গবন্ধুর কথা শ্যামল মিত্র গানটির গীতিকারকে জানান। এরপরই গানটি পূর্ণ রূপ পায়। কে জানতেন! বঙ্গবন্ধু এমন গানকে পূর্ণ রূপ দিতে বলার মাত্র কয়েক বছর পরই বাঙালি জাতি ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায়ের মুখোমুখি হবে। সেদিন বঙ্গবন্ধুকে পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যসহ ঘাতক, নরপিশাচরা হত্যা করে।

universel cardiac hospital

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু একটি পথনাটকে অভিনয় করেন। অভিনয় করেন একটি সিনেমাতেও। যা নির্মিত হয় তাঁরই নেতৃত্বে পরিচালিত বাঙালির মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর। ওই সিনেমা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক। সিনেমা অঙ্গনকে ভালোবেসে এ দেশের চলচ্চিত্রের উন্নয়নে আমৃত্যু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তিনি। পথনাটকে তিনি অভিনয় করেন ১৯৫৪ সালে। আলতাফ মাহমুদের নির্দেশনায় ঢাকার আরমানিটোলা মাঠে ‘কিষানের পালা’ নামে ওই গীতিছায়া মঞ্চস্থ হয়। এতে বঙ্গবন্ধুসহ অলি আহাদ ও আতাউর রহমান খান অভিনয় করেন।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক চলচ্চিত্র ‘সংগ্রামে’ ছোট্ট এক ভূমিকায় হাজির হয়েছিলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু। সে সময়ের চিত্রনায়ক কামরুল আলম খান খসরু ও সিনেমার পরিচালক চাষী নজরুল ইসলামের অনুরোধে ছোট্ট ওই চরিত্রে অভিনয়ে রাজি হয়েছিলেন তিনি। ছবির চিত্রনাট্যের শেষ দিকে ছিল, মুক্তিযুদ্ধের পর সদ্য স্বাধীন দেশের সামরিক বাহিনী বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের মহানায়ক বঙ্গবন্ধুকে স্যালুট করছে। এ দৃশ্য কীভাবে ধারণ করা যায়, সে নিয়ে চিন্তায় পড়েন পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম। একপ্রকার দুঃসাহস নিয়ে বঙ্গবন্ধুকে ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়ে বসেন ছবিটির নায়ক খসরু। বঙ্গবন্ধু প্রথমে রাজি হননি।

পরে ওই সময়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মান্নানকে দিয়ে সুপারিশ করিয়ে অভিনয়ের জন্য তাঁকে রাজি করানো হয়। ‘সংগ্রাম’ ছবিতে নায়ক ছিলেন খসরু আর নায়িকা সূচন্দা। ছবিটি ১৯৭৪ সালে মুক্তি পায়।

শেয়ার করুন