পাগলা মসজিদের দান সিন্দুকে চার মাসে পৌনে ৪ কোটি টাকা!

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

পাগলা মসজিদ
ফাইল ছবি

চার মাস ছয় দিন পর খোলা হয়েছে মহাবীর ঈসা খানের অধস্তন পুরুষ দেওয়ান জিলকদর খানের স্মৃতি বিজড়িত কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দান সিন্দুক। শনিবার (১২ মার্চ) জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের আটটি দান সিন্দুক খোলা হয়। দান সিন্দুকগুলো খোলার কাজ শেষ করতে সময় লাগে প্রায় এক ঘণ্টা।

সিন্দুকগুলো খুলে এবার সর্ব-কালের রেকর্ড পরিমাণ টাকা ও স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে। আটটি সিন্দুক থেকে মোট তিন কোটি ৭৮ লাখ ৫৩ হাজার ২৯৫ টাকা পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। এছাড়া ডলার, পাউন্ড, রিয়াল, রিঙ্গিতসহ বিভিন্ন দেশীয় অর্থ স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে।

universel cardiac hospital

সকাল ৯টায় মসজিদের বাক্স খোলার পর রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত টাকা গণনা শেষে এই হিসাব পাওয়া যায়। দান বাক্সের টাকা ১৫টি বস্তায় ভরে প্রায় দুই শতাধিক লোক দিনব্যাপী গননার কাজ করেন। এতে মসজিদ মাদরাসার ছাত্র শিক্ষক, রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারী, আনসার এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যরা অংশ নেন।

এর আগে সর্বশেষ গত ৬ নভেম্বর দান সিন্দুক খোলা হয়েছিল। তখন সর্বোচ্চ তিন কোটি ৭ লাখ ১৭ হাজার ৫৮৫ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। গতবারের তুলনায় এবার ৭১ লাখ ৩৫ হাজার ৭ ১০ টাকা বেশী পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে।

কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজমুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, এটি আসলে দেখার মতো ঘটনা। মানুষ তাদের মনোবাসনা পূরণের জন্য এখানে কোটি কোটি টাকা দান করেন। থাকে স্বর্ণালঙ্কার ও বৈদেশিক মুদ্রাও। টাকা-পয়সার সঙ্গে চিঠিপত্রও থাকে। সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্যে লেখা চিঠিগুলোতে নিজেদের অভাব, অভিযোগ, রোগমুক্তি ও মনোবাসনার কথা থাকে।

সাধারণত তিন মাস পর পর পাগলা মসজিদের দান বাক্স খোলা হয়। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে দান বাক্স খোলার সময়ের ব্যবধান বাড়ানো হয়েছে। পাগলা মসজিদে দান করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়, এমন জনশ্রুতি থেকে দিন দিন পাগলা মসজিদের দানবাক্সে দানকারীদের পরিমাণ বেড়েই চলছে। সকল ধর্মের লোকজন এ মসজিদে দান করে থাকেন।

শেয়ার করুন