ইউক্রেনের কিছু এলাকায় রাশিয়া এতটাই বোমা হামলা চালিয়েছে যে, শহরগুলোতে নিহতদের কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই গণকবর খুঁড়েই সমাহিত করতে বাধ্য হতে হচ্ছে।
মারিওপোলে রুশ বাহিনীর ঘেরাও করে রেখেছে। শহরটির বাস্তবতা অনেকটাই প্রকট। এছাড়াও খারকিভ, চেরনিহিভসহ রাজধানী কিইভের কাছের কিছু শহরেও এখন অনেকটা কঠিন অবস্থা। খবর বিবিসির।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ বন্দরনগরী মারিওপোল রাশিয়ার অবিরাম গোলাবর্ষণে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। সেখানে গত দুই সপ্তাহে খোঁড়া হয়েছে বেশ কয়েকটি গণকবর।
মারিওপোলের উপ-মেয়র ওরলভ বিবিসিকে বলেন, আমরা গোলায় নিহতদের ব্যক্তিগত কবরস্থানে দাফন করতে পারছি না। কারণ সেসব কবরস্থান নগরীর সীমানার বাইরে। সীমানা ঘিরে আছে রুশ বাহিনী।
মারিওপোলের সিটি কাউন্সিল বলেন, নগরীটিতে বেসামরিক নাগরিক নিহত সংখা দুই হাজার ১০০ ছাড়িয়েছে। রাশিয়ার প্রচণ্ড গোলাবর্ষণের কারণে মরিওপোল থেকে কেউ বের হতে পারছে না। এমনকি নাগরিকদের সরাতে নিরাপদ জোন খোলার চেষ্টা করার পরও পরিস্থিতি একই রয়েছে।
গণকবরে নিহত সংখ্যা কত হতে পারে জানাতে চাইলে তিনি বলেন, একটি কবরে ৬৭টি লাশ আছে।
তিনি আরও বলেন, গোলা থেকে বাঁচতে নগরীর হাজার হাজার বাসিন্দা বাড়ির বেজমেন্টে লুকাচ্ছে। অনেক পরিবার মারা যাওয়া সদস্যদের নিজস্বভাবেই বাড়ির আঙ্গিনায় কিংবা বাগানে কবর দিচ্ছেন।
যুদ্ধবিধ্বস্ত নগরীগুলোর পৌর সেবা ভেঙে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে রাস্তা পরিষ্কার কিংবা মেরামতির কাজ যারা করেন, তারাই রাস্তা থেকে লাশ সংগ্রহ করছেন। আর এই কাজ করার সময় এই কর্মীদেরও কেউ কেউ মারা গেছেন।
মারিওপোল নগরীতে ১১ দিন ধরে নেই খাবার, পানি, পয়ঃনিষ্কাশন, কিংবা প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় উষ্ণতার কোনো ব্যবস্থা, জানান উপ মেয়র ওরলভ।
রাজধানী কিয়েভের দ্বারপ্রান্তে চার মাইল উত্তরপশ্চিমের বুচা শহরে একটি গির্জার কাছে খোঁড়া হয়েছে গণকবর। স্থানীয় এক এমপি এ খবর জানিয়েছেন। সেই গণকবরে আছে ৬০ টিরও বেশি লাশ।
উল্লেখ্য, ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী। এ অভিযানের অংশ হিসেবে স্থল, আকাশ ও পানিপথে ইউক্রেনে হামলা চালানো হচ্ছে। অভিযান শুরুর পর ইউক্রেনের সেনাবাহিনীও প্রতিরোধের চেষ্টা চালাচ্ছে। এতে দুপক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত চলছে। আজ যুদ্ধের ২০তম দিন।