দেখতে দেখতে তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলো রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ। এখনো রাশিয়ার সঙ্গে লড়াই করে চলেছে ইউক্রেন। যদি যুদ্ধ আরও দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে পারমাণবিক অস্ত্রের ওপর নির্ভরশীল হতে পারে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ এ আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
পেন্টাগনের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার আশঙ্কা, ইউক্রেনের প্রতিরোধ যদি আরও দীর্ঘ হয়ে ওঠে, তাহলে পশ্চিমা দেশগুলোর বিরুদ্ধে পরমাণু যুদ্ধও শুরু করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন পুতিন।
সংস্থার প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল স্কট ব্যারিয়ার জানিয়েছেন, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ধাক্কায় রাশিয়া সমস্যায় রয়েছে। এদিকে ইউক্রেনের কিছু অংশ দখল করে রাখার ফলে রুশ সেনার শক্তিক্ষয় ও আধুনিক অস্ত্রভাণ্ডারেও টান পড়ছে। সব মিলিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছে মস্কো। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করতেই পারমাণবিক অস্ত্র প্রয়োগ করতে পারে।
যত সময় যাচ্ছে ততই চাপ বাড়ছে পুতিনের ওপরে। এরই মধ্যে ব্রিটেন জানিয়েছে, রাশিয়া ইউক্রেনে যা করছে তা যুদ্ধাপরাধ। সাধারণ নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে তারা।
এর আগে ক্রেমলিনের আগ্রাসনের নিন্দা করে সর্বসম্মত ভাবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে যুদ্ধাপরাধী বলে ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট। রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম প্রস্তাব করলে দলের দুই সিনেটের তাকে সমর্থন জানান।
এদিকে ইউক্রেনকে কোটি কোটি ডলারের অত্যাধুনিক অস্ত্র দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে ইউক্রেনকে অস্ত্র দিলে তা যুদ্ধের সামিল মনে করা হবে বলে হুমকি দিয়েছে রাশিয়া।
সম্প্রতি মার্কিন অস্ত্রবোঝাই গাড়িতে হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছে মস্কো। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের পর থেকেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে কিয়েভকে অস্ত্রের জোগান দিচ্ছে ওয়াশিংটন। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের হাতে প্রায় ১২০ কোটি মার্কিন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম তুলে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ করে রুশ বাহিনী। গত ২০ দিনে তাদের হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহর। প্রাণ হারিয়েছেন কয়েকশ বেসামরিক নাগরিক। জাতিসংঘ জানিয়েছে, রুশ আক্রমণের মুখে এরই মধ্যে ৩০ লাখের বেশি মানুষ ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়েছেন।