‘ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশিজের’ বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ গাফফার চৌধুরীর

হাসান শান্তনু

প্রবাসী বাংলাদেশিদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশিজের’ বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছেন প্রখ্যাত সাংবাদিক, কলামিস্ট আবদুল গাফফার চৌধুরী। সংগঠনটির আগামী ২৯ মার্চ ব্রিটিশ হাউস অব পার্লামেন্টের একটি কক্ষে অনুষ্ঠেয় অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। যুক্তরাজ্যে অবস্থিত ঢাকার হাইকমিশনের গোয়েন্দা সংস্থা ওই সংগঠনের আসল উদ্দেশ্য খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ নেওয়ারও আহবান জানান অমর ভাষাগানের রচয়িতা গাফফার চৌধুরী।

প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের সম্মাননা ও স্বীকৃতি দেওয়ার উদ্যোগ নেয় যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংগঠন ‘ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশিজ’। ১৯৭১ সালে প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনে বিশেষ অবদান রেখেছেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে গত বছরের ১৬ ডিসেম্বরে এমন ৫০ ব্যক্তির নাম প্রকাশ করে সংগঠনটি। আগামী ২৯ মার্চের অনুষ্ঠানে আরো ৫০ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করার কথা।

universel cardiac hospital

প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের সম্মাননা ও স্বীকৃতির মাধ্যমে সব প্রবাসীকে সম্মান জানানোর উদ্যোগের কথা ঘোষণা করে আলোচনায় আসে সংগঠনটি। গত ডিসেম্বর মাসে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে যুক্তরাজ্যে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সংগঠনটি। তবে এটা ‘বহির্বিশ্বে ছদ্মবেশী জামায়াতি সংস্থা’ ও ‘বিদেশে দেশবিরোধী প্রচারণা চালাচ্ছে’ বলে অভিযুক্ত করেন গাফফার চৌধুরী।

আবদুল গাফফার চৌধুরীর মতে, ‘ভয়েস অব গ্লোবাল বাংলাদেশিজের আসল মতলব আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে যুক্তরাজ্যে বসে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা। এই প্রতিষ্ঠানের সভাপতিকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। তাকে তারেক রহমানের (যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) বিভিন্ন সভায় উপস্থিত থাকার এবং মুক্তিযুদ্ধ ও তার নেতাদের সম্পর্কে বিভ্রান্তকর বক্তব্য দিতে শুনেছি। এ সম্পর্কে আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাও আছে।’

তিনি বলেন, ‘লন্ডনের একটি বাংলা টেলিভিশনে টকশোতে যোগদান করতে গিয়ে তার সঙ্গে আমার বিতর্ক অসৌজন্যতার পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। তারপর থেকে আমি তার সঙ্গে কোনো টকশোতে যোগ দিই না।’

২৯ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য অনুষ্ঠানটি তদন্ত করে দেখার আহবান জানিয়ে প্রবাসী সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী বলেন, ‘তদন্ত কার্যটি করার দায়িত্ব বাংলাদেশ দূতাবাসের। দূতাবাসের একটি গোয়েন্দা সংস্থাও আছে। তারা কী করে, আমি জানি না। আমি যখন দূতাবাসের একজন উচ্চ পর্যায়ের অফিসারকে বিষয়টি জানালাম, তখন দেখি তিনিও এ সম্পর্কে সম্পূর্ণ অনবহিত। হাইকমিশনার সাহেবাও কিছু জানেন না। তারা সম্মেলনটিকে কোনো গুরুত্বই দেননি।’

তিনি বলেন, ‘আমার ধারণা, হাইকমিশনার সাহেবাকে চিফ গেস্ট করা হলেই তিনি এতো সভা-সমিতিতে দৌড়াদৌড়ি করেন, লন্ডনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব ধ্বংসের জন্য কোনো ষড়যন্ত্র চলছে কীনা, সে খবর রাখেন না। আওয়ামী লীগের সরকারের উচিত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচার চালানোর জন্য লন্ডনভিত্তিক যে নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে, সে সম্বন্ধে খবরাখবর রাখা এবং সে প্রচার ব্যর্থ করার চেষ্টা চালানো। লন্ডনের দূতাবাসে যেসব গোয়েন্দা অফিসার পাঠানো হয়েছে, তারা কী করেন সে সম্পর্কেও সরকারের অবহিত থাকা উচিত।’

শেয়ার করুন