বিদ্যুতের দাম বাড়ার ইঙ্গিত দিলেন প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিদ্যুৎ
ফাইল ছবি

দেশে বিদ্যুতের দাম বাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এজন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, সরকার চাচ্ছে দাম বাড়লেও তা যেন সহনীয় পর্যায়ে থাকে।

বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) সচিবালয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ পাওয়া নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী।

মুজিববর্ষে শতভাগ বিদ্যুতায়ন করায় বিদ্যুৎ বিভাগকে এবছর স্বাধীনতা পুরস্কার দেয়া হয়েছে।

বিদ্যুতের দাম বাড়বে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী দিনগুলোতে যে চ্যালেঞ্জ আসছে, তা মোকাবেলার জন্য যে পরিমাণ ধৈর্য দরকার, তা সবার কাছে আশা করি। দাম বাড়বে কি না সেটা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) বলতে পারবে। প্রস্তাব গেছে, সেটা বিইআরসির সিদ্ধান্ত। তবে আমরা চাচ্ছি যতটুকু সহনীয় পর্যায়ে রাখা যায়।

দাম নিয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সবাই যেন প্রস্তুত থাকে। হয় শকড আসবে, না হয় আসবে না।’

নসরুল হামিদ বলেন, ‘রাষ্ট্র বা সরকার বিদ্যুতে কতটুকু বিনিয়োগ করবে এ জায়গাটা স্থিতিশীল রাখার জন্য। তবে এটার একটা শকড প্রাইস আছে, সরকার কতটুকু নিতে পারবে। এটা সরকারে অর্থ বিভাগ বুঝবে। আমাদের তো একটা প্রস্তাবনা আছে। তারা (অর্থ বিভাগ) যদি বলে সব শকড নেবে, তাহলে তো এখানে কোনো প্রশ্ন আসে না। যদি বলে ফিফটি ফিফটি আমি শকডটা দেবো (অর্ধেক ভর্তুতি দেব), তাহলে আরেক রকম প্রশ্ন আসবে। এটা নির্ভর করে ফাইন্যান্সের ওপর, আমার ওপর তো নির্ভর করে না।’

নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের সুখবর জানুয়ারিতে আসতে পারে

শতভাগ বিদ্যুৎ হলেও মানুষ নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ কবে পাবে- এমন প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন প্রত্যাশা বাড়ছে, দিনে দিনে আরও বাড়বে। আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ হলো নিরবচ্ছিন্ন ও সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা। সারা বিশ্বে তেল ও এলএনজি গ্যাসের দামের যে ঊর্ধ্বগতিসহ জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বেড়েছে সেটাকে মাথায় নিয়ে এগোনো আমাদের জন্য একটি দুরূহ চিন্তার বিষয়। আমরা সবকিছু মাথায় রেখেছি। আশা করছি, সামলাতে পারবো। সরকার তো আছে, আমরা এখনো কোনো বড় ধরনের সিদ্ধান্ত নেইনি।

রামপাল ও মাতারবাড়ী প্রকল্প নিরবচ্ছিন্ন ও সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্র তৈরি করবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

নসরুল হামিদ বলেন, ‘নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে আমরা আগামী বছরের জানুয়ারি নাগাদ একটা ভালো জায়গায় যেতে পারব। সাতশো নদীর দেশ বাংলাদেশের জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ একটা বড় চ্যালেঞ্জ। আগামীতে বিদ্যুতের ব্যবহারের ব্যাপারে যেহেতু বিশ্বব্যাপী একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাই সাশ্রয়ীভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা উচিত।’

রমজান মাসে তারাবিহ নামাজের সময় মসজিদের এসিগুলো অতিরিক্ত দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা তৈরি করে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এ বিষয়টি চিন্তা করতে হবে। যাতে আমরা ওই সময়টা কম ব্যবহার করে কতটুকু সাশ্রয়ী করতে পারি।’

‘আমাদের দায়িত্ব বেড়ে গেল’

বিদ্যুৎবিভাগ স্বাধীনতা পুরস্কার পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় নসরুল হামিদ বলেন, ‘আমরা শতভাগ বিদ্যুতায়ন করেছি। বাংলাদেশের প্রতিটি ঘর আলোকিত করেছি। এটার সম্পূর্ণ কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। শতভাগ বিদ্যুতায়নের মাধ্যমে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান এবং মুজিববর্ষে শতভাগ বিদ্যুতায়ন সফলভাবে সম্পন্ন করায় বিদ্যুৎ বিভাগ স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছে। এটা আমাদের জন্য বিশাল পাওয়া। প্রতিটি বিদ্যুৎকর্মী অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। জ্বালানি বিভাগও এ কৃতিত্বের অংশীদার।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শঙ্কিত যে, আমাদের দায়িত্ববোধ আরও বেড়ে গেলো। এ ধরনের সম্মানা রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ। এছাড়া আগামীতে চ্যালেঞ্জগুলো কীভাবে মোকাবিলা করবো, সে জন্য পরিকল্পনা নিতে হবে।’

এ সময় বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন