ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট না হলে সরকারি চাকরি মেলে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জিএম কাদের)। তিনি বলেছেন, সরকারি দলের জার্সি না পরলে ব্যবসা করা কঠিন। ক্ষমতাসীন দলের মানুষেরা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে। ফুটপাতের দোকানি থেকে সব স্তরের ব্যবসায়ী ও মানুষ ক্ষমতাসীনদের চাঁদা না দিয়ে কিছু করতে পারছে না।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে জিএম কাদের এসব কথা বলেন।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করলেও দেশের মানুষ স্বাধীনতার স্বাদ পাচ্ছে না বলেও দাবি করেন জাপা চেয়ারম্যান।
জিএম কাদের বলেন, আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি কিন্ত মুক্তি পাইনি। দেশের মানুষ চেয়েছিল, এখনও চায়। জাতীয় পার্টি স্বাধীনতার মূল চেতনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের মানুষকে স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ দিতেই রাজনীতি করছে।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। কিন্তু দেশের মানুষ যে মুক্তি লাভের জন্য স্বাধীনতার ডাকে সাড়া দিয়েছিল, সে মুক্তি আজও মিলেনি। দেশের মানুষ চেয়েছিল বৈষম্য, বঞ্চনা থেকে মুক্তি। তারা চেয়েছিল শোষনমুক্ত একটি দেশ। তারা চেয়েছিল তাদের মালিকানা, তাদের জন্য একটি দেশ, বাংলাদেশ। স্বাধীনতার ৫১ বছর পর হলেও দেশের মানুষ বৈষম্য, শোষন ও বঞ্চনার হাত থেকে মুক্তি পায়নি।
১৯৯১র পর থেকে সরকার, সরকারী দলের লোকজন সাধারণ মানুষের মধ্যে বৈষম্যমূলক আচরন করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
জিএম কাদের বলেন, ৯১-এর পর থেকে দেখা যাচ্ছে, সরকারদলীয় প্রধান সরকার হচ্ছেন বা নির্বাহী বিভাগের প্রধান হচ্ছেন। সংবিধানের কিছু বিধানের কারণে নির্বাহী বিভাগের জবাবদিহিতার স্থল আইনসভাও তার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রনে। আবার কিছু পরস্পর বিরোধী সংবিধানের বিধানাবলীর সুযোগে বিচার বিভাগ প্রায় সবটাই বর্তমানে রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে নির্বাহী বিভাগের প্রধানের নিয়ন্ত্রনের আওতাভূক্ত। এক কথায় রাষ্ট্রের ক্ষমতার সকল স্তম্ভসমূহ যারা পরস্পরের ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা করার কথা, তা একক ব্যক্তি বা নির্বাহী প্রধানের নিয়ন্ত্রণে। সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে এমন বাস্তবতায় কোনভাবেই গনতন্ত্রের চর্চা সম্ভব নয়।
এসময় জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, যত বাধাই আসুক আমরা জনগনের স্বার্থ রক্ষায় রাজপথে থাকবো। দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চলবে।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও জাতীয় সাংস্কৃতিক পাটির আহ্বায়ক শেরীফা কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।