রুশ সেনারা ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলের স্লাভুতিচ শহর দখলে নিয়েছেন বলে জানা গেছে। শহরটিতে নিষ্ক্রিয় চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মীরা বসবাস করেন। স্থানীয় সময় শনিবার (২৬ মার্চ) বার্তা আদান-প্রদানের অ্যাপ টেলিগ্রামে এ তথ্য জানিয়েছেন কিয়েভের আঞ্চলিক গভর্নর ওলেক্সান্দ্র পাভলিয়াক।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, স্লাভুতিচ শহরের দখল হারানোর কথা স্বীকার করলেও এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি গভর্নর পাভলিয়াক। এ নিয়ে তাত্ক্ষণিকভাবে মস্কোর পক্ষ থেকেও কোনো মন্তব্য আসেনি।
বিবিসির খবরে বলা হয়, ১৯৮৬ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ পারমাণবিক বিপর্যয় ঘটনা ঘটে। এটি চেরনোবিলের বিপর্যয় হিসেবে পরিচিত। এই কেন্দ্রের সরিয়ে নেওয়া কর্মীদের জন্য স্লাভুতিচ শহরটি গড়ে তোলা হয়।
গত মাসে ইউক্রেনে রাশিয়া হামলা শুরুর কয়েক দিনের মধ্যে বেলারুশ সীমান্তবর্তী চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে সক্ষম হয়। চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে এখনো ৪টি চুল্লির বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজ চলছে এবং এখানে দেশের ১৫টি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপন্ন উচ্চ তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটি কেন্দ্রীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ইউনিট চালু করেছে ইউক্রেন।
গতকাল শুক্রবার জাতিসংঘের পারমাণবিক নজরদারি সংস্থা সতর্ক করে দিয়ে বলেছিল, এই শহরে যুদ্ধের ফলে শ্রমিকেরা প্ল্যান্টে যেতে বা সেখান থেকে বেরোতে পারবেন না।
স্লাভুতিচ রাশিয়ার দখলে যাওয়ার পর স্থানীয় বাসিন্দারা ইউক্রেনের পতাকা হাতে প্রতিবাদ করেন বলে টেলিগ্রামে জানান গভর্নর ওলেক্সান্দ্র পাভলিয়াক। ফাঁকা গুলি চালিয়ে ও শব্দবোমা ছুড়ে রুশ সেনারা তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেন।
এদিকে এক অনলাইন পোস্টে স্লাভুতিচের বাসিন্দাদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে শহর কর্তৃপক্ষ। ওই পোস্টে বলা হয়, ‘অস্ত্রের খোঁজে দখলদারদের (রুশ সেনাবাহিনী) যানগুলো শহরে টহল দিচ্ছে। অনুগ্রহ করে তাদের উসকানি দিয়েন না। নিজেদের বিপদে ফেলবেন না।’
স্লাভুতিচ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের নতুন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা ওলেক্সি আরেস্টোভিচ। শনিবারের প্রতিবাদের দিকে ইঙ্গিত করে টেলিভিশনে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি বলেন, শহরটির বাসিন্দারা দখলদারদের বীরত্বের সঙ্গে প্রতিরোধ করছে।
এর আগে গতকাল ইউক্রেনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রুশ সেনারা স্লাভুতিচের কাছাকাছি পৌঁছেছেন। যুদ্ধ শুরুর আগে সেখানে প্রায় ২৫ হাজার মানুষের বসবাস ছিল।