বরেণ্য আবৃত্তিশিল্পী ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এবং ‘মত ও পথ’ সম্পাদক যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।
আজ শুক্রবার কানাডা থেকে পাঠানো এক শোক বার্তায় মোকতাদির চৌধুরী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
তিনি বলেন, এদেশে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার স্বপক্ষের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন আবৃত্তিশিল্পী হাসান আরিফ। দেশে আবৃত্তিচর্চার বুনিয়াদ গঠন এবং প্রশিক্ষণে তিনি ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায়। নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে দেশের গণতান্ত্রিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনগুলোতে তাঁর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর অকাল মৃত্যুতে দেশের মুক্ত সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে তা অপূরণীয়।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (০১ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর শ্যামলীতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় হাসান আরিফের। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর। বর্ণাঢ্য জীবনে সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগ্রামের সামনের কাতারের যোদ্ধা ছিলেন তিনি।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু সংবাদমাধ্যমকে জানান, হাসান আরিফ মরণোত্তর দেহদান করে গেছেন। ইতোমধ্যে হাসপাতালেই এই আবৃত্তিশিল্পীর মরদেহের গোসল হয়েছে। মরদেহ রাতে হিমঘরে রাখা হবে।
তিনি আরও জানান, শনিবার (০২ এপ্রিল) সকাল ৯টায় কফিন রাজধানীর ধানমণ্ডির বাসায় নেওয়া হবে। সেখানে জানাজা শেষে বেলা ১১টায় সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য হাসান আরিফের মরদেহ রাখা হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। পরে বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জামে মসজিদে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর কফিন নিয়ে যাওয়া হবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে বেলা ৩টায় মরদেহ হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিকতা সারা হবে।
গত বছরের ২৯ নভেম্বর করোনা পজেটিভ হন হাসান আরিফ। এরপর ২ ডিসেম্বর রাজধানীর শ্যামলীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। পরে গত মঙ্গলবার লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। শুক্রবার দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে মারা যান তিনি।
১৯৬৫ সালের ৮ ডিসেম্বর কুমিল্লার সাহেব বাড়িতে জন্ম নেওয়া হাসান আরিফ আশির দশক থেকে আবৃত্তি করছেন। বেশ কিছু অ্যালবামও বের হয়েছে তার। কবিতার সঙ্গে সম্পর্ক ১৯৮৩ সাল থেকে, সরিত আবৃত্তিচক্র নামের সংগঠন থেকে। সেখান থেকে যোগ দেওয়া আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদে। পরবর্তীকালে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের হয়ে সামাজিক সাংস্কৃতিক গণতান্ত্রিক সংগ্রামের সামনের কাতারের যোদ্ধা ছিলেন তিনি। নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের মাঠেও ছিলেন সক্রিয়।