‘কোন আইনে লেখা আছে যে একজন নারী টিপ পরতে পারবে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক

টিপ পরা বা না পরা নারী সমাজের অধিকার, তা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্যের কটূক্তি বাংলাদেশের তথা সব নারী সমাজের জন্য একটি লজ্জাজনক ঘটনা বলে মন্তব্য করেছেন সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য সুবর্ণা মুস্তাফা। একই সঙ্গে টিপ পরায় কলেজ শিক্ষিকাকে উত্ত্যক্তকারী অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া আহ্বানও জানান তিনি।

রোববার (৩ এপ্রিল) জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে তিনি এসব কথা বলেন।

universel cardiac hospital

তিনি বলেন, বাংলাদেশের কোন সংবিধানে, কোন আইনে লেখা আছে যে একজন নারী টিপ পরতে পারবে না। এখানে হিন্দু-মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ এমনকি সে বিবাহিত না বিধবা সেটা বিষয় নয়…একটি মেয়ে টিপ পরেছে। তিনি একজন শিক্ষক। রিকশা থেকে নামার পর দায়িত্বরত পুলিশ অফিসার তাকে টিজ করেছেন।

সুবর্ণা মুস্তাফা বলেন, শনিবার ফার্মগেটে একজন কলেজ শিক্ষিকা যখন রিকশা থেকে নেমে তার কলেজের (তেজগাঁও) দিকে যাচ্ছিলেন তখন সেখানে কর্তব্যরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের (পুলিশ) পক্ষ থেকে তাকে সুস্পষ্টভাবে ইভটিজিং করা হয়েছে। তিনি যখন এর প্রতিবাদ করতে গেছেন তখন তাকে তুই-তুকারী করা হয়েছে। এমন কুৎসিত বাক্য ব্যবহার করা হয়েছে, যা তিনি ভাষায় প্রকাশ করতে পারেননি। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।

এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, ‘আমি কোন দল রিপ্রেজেন্ট করি এগুলো তার ঊর্ধ্বে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী সবসময় বলেন, মানুষ আগে, সবাই সমান, মানুষের অধিকার সবার আগে। বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা বলেছেন, মানুষকে ভালো বাসতে হবে, তার কথা বলার অধিকার, তার জীবন যাপনের অধিকার, তার মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে মামলাও করেছেন ওই শিক্ষিকা। আমি অনুরোধ করবো যে মন্ত্রণালয় বা বিভাগ এ বিষয়টি দেখেন, তারা যদি এখনো এ বিষয়টি নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ না নিয়ে থাকেন, তারা যেন ইমিডিয়েটলি এ বিষয়ে জোরালো পদক্ষেপ নেন। আশা করি তারা দ্রুত বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবেন ও পদক্ষেপ নেবেন।

এর আগে শনিবার (২ এপ্রিল) রাজধানীর গ্রিন রোডের বাসা থেকে কলেজে যাওয়ার পথে উত্ত্যক্তের শিকার হন তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক ড. লতা সমাদ্দার। তিনি অভিযোগ করেন, হেঁটে কলেজের দিকে যাওয়ার সময় হুট করে পাশ থেকে মধ্যবয়সী, লম্বা দাড়িওয়ালা একজন- ‘টিপ পরছোস কেন’ বলেই বাজে গালি দেন তাকে। ওই মধ্যবয়সী ব্যক্তির গায়ে পুলিশের পোশাক ছিল।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, ঘটনার প্রতিবাদ জানালে একপর্যায়ে তার পায়ের ওপর দিয়েই বাইক চালিয়ে চলে যান সেই ব্যক্তি। পরে এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।

শেয়ার করুন