সমুদ্র বিজয়ের গৌরবে অত্যধিক উচ্ছ্বসিত হওয়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির লক্ষ্যে সম্পদ আহরণের পন্থা উদ্ভাবন অত্যন্ত জরুরি। নবতর কর্মকৌশল প্রণয়ন ও আশু-মধ্য-দীর্ঘমেয়াদি প্রায়োগিক পদক্ষেপ দৃশ্যমান করা না গেলে সমুদ্র অর্থনীতি থেকে কার্যকর প্রবৃদ্ধি অর্জন দীর্ঘায়িত হবে। ন্যূনতম অবজ্ঞা-অবহেলা পরিহার করে তাৎপর্যপূর্ণ উদ্যোগ গ্রহণে ইতোমধ্যে যথার্থ সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত। বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের উন্নয়নে সচল অর্থনীতির আয়-ব্যয়ের ভারসাম্য রক্ষায় সমুদ্রসম্পদ আহরণের গুরুত্ব অপরিসীম। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের দৃষ্টান্ত অনুসরণে আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে কালক্ষেপণ না করে এক্ষেত্রে মনোযোগী হওয়া সময়ের দাবি।
৬ মার্চ চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে মেরিন ফিশারিজ একাডেমির ৪১তম ব্যাচের ক্যাডেটদের ‘মুজিববর্ষ পাসিং আউট প্যারেড’-এ যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী করতে সমুদ্রসম্পদ ব্যবহারের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘বঙ্গোপসাগর শুধু আমাদের জন্য না; আন্তর্জাতিক বাণিজ্যক্ষেত্রেও বিশাল গুরুত্বপূর্ণ। এখানে বিশাল সম্পদও রয়েছে। এখানে যেমন মৎস্যসম্পদ রয়েছে, তেমনই অন্যান্য সম্পদও আছে। সেগুলো আহরণ করে অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে পারব-এটাই আমি আশা করি। ব্লু-ইকোনমি ব্যবহার করে আমাদের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী ও মজবুত করতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রীর ওই আহ্বানের যথাযথ মূল্যায়ন ও অত্যাবশ্যকীয় প্রযোজ্য কর্মকাণ্ড জোরালো করা অনিবার্য হয়ে পড়েছে।
এটি আর নতুন কোনো বিষয় নয়, ব্লু-ইকোনমি বা সুনীল অর্থনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অত্যন্ত সম্ভাবনাময় দেশ। অর্থনীতিবিদদের মতে, বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রসীমার তলদেশে যে সম্পদ রয়েছে, তা টেকসই উন্নয়নের জন্য সঠিক পরিকল্পনামাফিক ব্যবহার করা গেলে ২০৩০ সাল নাগাদ প্রতিবছর আড়াই লাখ কোটি ডলার আয় করা সম্ভব হবে। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে চলা বঙ্গোপসাগরে সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধের অবসান ঘটিয়ে এক যুগান্তকারী রায়ে দেশের মোট আয়তনের প্রায় কাছাকাছি ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটারেরও অধিক সমুদ্রসীমায় বাংলাদেশ তার পূর্ণ অধিকার ও সার্বভৌমত্ব লাভে দেশের সুনীল অর্থনীতির অপার সম্ভাবনাকে অনেক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে।
ওই সাফল্যগাথায় সমুদ্রসম্পদকে যথাযথ আহরণ-ব্যবহার-রপ্তানির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে উঁচুমার্গে এগিয়ে নেওয়া আবশ্যক। সমুদ্র অর্থনীতি (ব্লু-ইকোনমি) সংশ্লিষ্ট গবেষণা ও সম্পদ আবিষ্কার-আহরণ-প্রয়োজনীয় ব্যবহার এবং দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে এ অবদান বিশাল গুরুত্ব বহন করে। সমুদ্র জয়ের ফলে বঙ্গোপসাগরে ভারতের থাকা ১০টি গ্যাস ব্লকের মধ্যে ৮টি এবং মিয়ানমারের অধীনে থাকা ১৩টির মালিকানা পেয়েছে বাংলাদেশ। জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বঙ্গোপসাগরের তলদেশে পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ জ্বালানি তেল ও গ্যাসের মজুত রয়েছে; যার মাধ্যমে দেশ ও বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে আগামী দিনের জ্বালানি-রাজনীতি ও অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
প্রাসঙ্গিকতায় জাপান-চীনসহ অনেক দেশের সমুদ্রসম্পদের ব্যবহারকে দৃষ্টান্তরূপে গ্রহণ যেতে পারে। জাপানের ভোজন সংস্কৃতিতে ‘নরি’ খ্যাত উপাদেয় বস্তুটি সমুদ্রে ভাসমান নরম শ্যাওলা থেকেই আবির্ভূত। এটি কিন্তু উদ্ভিদ জাতীয় কোনো অপ্রাণিজ সম্পদ নয়। সমুদ্রের এ শ্যাওলাকে যথাযথ প্রক্রিয়াজাত করে জাপানের বিখ্যাত খাদ্য তথা সুশী-নরি মাখি-অনিঙ্গিরী-নুডলস জাতীয় সব খাবারে এই নরি’র ব্যবহার শুধু উপাদেয় নয়; সমুদ্রসম্পদ ব্যবহারে উৎকৃষ্ট উপমাও বটে। প্রাণিজ সম্পদের মধ্যে শামুক-ইকা-অক্টোপাসসহ বহু ধরনের সুস্বাদু মাছ আমাদের সমুদ্রসীমায় প্রচুর পরিমাণে প্রজনন ও সংগ্রহ করার সুযোগ থাকলেও জাপানি-চীনাদের মতো এসব প্রোটিনযুক্ত খাবারগুলোকে অবজ্ঞা করে সমগ্র সমুদ্র অর্থনীতি কোনোভাবেই প্রাঞ্জল করা যাবে না।
২০১৩ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় ২য় এবং বিশ্বের ১২তম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়’ এবং ২০১৮ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী সদর দপ্তরের সহায়তায় ‘বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব মেরিটাইম রিচার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ (রিমরাড) প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্যই ছিল সমুদ্র অর্থনীতির সমৃদ্ধকরণে প্রত্যক্ষ গবেষণা-জ্ঞানসৃজন-উপযোগী মানবসম্পদ উৎপাদন এবং সমুদ্রসম্পদের সুরক্ষা-আহরণ-সংরক্ষণ প্রভৃতির ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনসূত্রে জানা যায়, মিয়ানমারের সঙ্গে মামলায় নতুন সমুদ্রসীমা অর্জনের দুই বছর পর ২০১৪ সালের ৮ জুলাই বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ সমুদ্রসীমানার আনুমানিক ২৫ হাজার ৬০২ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে ১৯ হাজার ৪৬৭ বর্গকিলোমিটারের অধিকার পায় বাংলাদেশ। এরপর জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৭ সালে ‘ব্লু-ইকোনমি সেল’ গঠন করে সমুদ্রসম্পদ সুরক্ষায় ২০১৯ সালে মেরিটাইম জোন অ্যাক্ট প্রণয়ন করা হয়েছে। ওই সূত্রমতে জানা যায়, বিশ্বের ৪৩০ কোটিরও বেশি মানুষের ১৫ ভাগ প্রোটিনের জোগান দিচ্ছে সামুদ্রিক মাছ, উদ্ভিদ ও জীবজন্তু। পৃথিবীর ৩০ ভাগ গ্যাস ও জ্বালানি তেল সরবরাহ হচ্ছে সমুদ্রতলের বিভিন্ন গ্যাস ও তেলক্ষেত্র থেকে। ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় অর্থনীতির সিংহভাগ সমুদ্রনির্ভর। এ ছাড়াও চীন, জাপান, ফিলিপাইনসহ বেশকিছু দেশ ২০০ থেকে ৩০০ বছর আগেই সমুদ্রকেন্দ্রিক অর্থনীতির দিকে মনোনিবেশ করেছে। বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতির প্রায় পাঁচ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের কর্মকাণ্ড হচ্ছে সমুদ্রকে ঘিরে।
সমুদ্রসীমা বিজয়ের ফলে ব্লু-ইকোনমির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দুই ধরনের সম্পদ অর্জন করেছে। এর মধ্যে একটি প্রাণিজ আরেকটি হলো অপ্রাণিজ। প্রাণিজের মধ্যে রয়েছে, মৎস্যসম্পদ, সামুদ্রিক প্রাণী, আগাছা-গুল্মলতা প্রভৃতি। বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় রয়েছে চারটি মৎস্য ক্ষেত্র। সেখানে ৪৪০ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ, ৩৩৬ প্রজাতির শামুক-ঝিনুক, ৭ প্রজাতির কচ্ছপ, ৫ প্রজাতির লবস্টার, ৩৬ প্রজাতির চিংড়ি, ৩ প্রজাতির তিমি, ১০ প্রজাতির ডলফিনসহ প্রায় ২০০ প্রজাতির সামুদ্রিক ঘাস রয়েছে। আরও রয়েছে স্পিরুলিনা নামক সবচেয়ে মূল্যবান আগাছা। অপ্রাণিজ সম্পদের মধ্যে রয়েছে খনিজ ও খনিজজাতীয় সম্পদ যেমন-তেল, গ্যাস, চুনাপাথর প্রভৃতি। এছাড়াও ১৭ ধরনের মূল্যবান খনিজ বালি। যেমন: জিরকন, রুটাইল, সিলিমানাইট, ইলমেনাইট, ম্যাগনেটাইট, গ্যানেট, কায়ানাইট, মোনাজাইট প্রভৃতি, যার মধ্যে মোনাজাইট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সমুদ্রসৈকতের বালিতে মোট খনিজের মজুত ৪৪ লাখ টন। প্রকৃত সমৃদ্ধ খনিজের পরিমাণ প্রায় ১৭ লাখ ৫০ হাজার টন, যা বঙ্গোপসাগরের ১৩টি স্থানে পাওয়া গেছে।
২০২২ সালের শুরুর দিকে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে, প্রায় দুই বছর ধরে গবেষণার পর বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের একান্ত সমুদ্র এলাকায় বিভিন্ন প্রজাতির বেশকিছু মূল্যবান উদ্ভিদজাত এবং প্রাণিজ সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। গবেষণার তথ্য-উপাত্ত অনুসারে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় বিপুল পরিমাণ গ্যাস হাইড্রেট ছাড়াও ২২০ প্রজাতির সি-উইড, ৩৪৭ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ, ৪৯৮ প্রজাতির ঝিনুক, ৫২ প্রজাতির চিংড়ি, ৫ প্রজাতির লবস্টার, ৬ প্রজাতির কাঁকড়া এবং ৬১ প্রজাতির সি-গ্রাস চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওই গবেষণায় বাংলাদেশের একান্ত অর্থনৈতিক এলাকায় ম্যারিন জেনেটিক রিসোর্সের অবস্থান এবং বিবিধ প্রজাতি চিহ্নিত করে অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের কিছু প্রজাতির সি-উইডে প্রচুর প্রোটিন আছে, যা ফিশ ফিড হিসাবে অমদানি করা ফিশ অয়েলের বিকল্প হতে পারে। আবার কিছু প্রজাতি অ্যানিমেল ফিডের মান বৃদ্ধিতে ব্যবহৃত হতে পারে। কসমেটিকে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত উপাদানসদৃশ এমন সিউইডও অনেক পাওয়া গেছে।
সমুদ্রসীমা বিজয়ের ১০ বছরে বাংলাদেশের অর্জনের মধ্যে রয়েছে ২০১৩ সালে ভারতের রাষ্ট্রীয় কোম্পানি ও এনজিসির সঙ্গে দুটি অগভীর ব্লকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের চুক্তি। এছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার কোম্পানি সান্তোসের সঙ্গে গভীর ব্লক ১১ ও দক্ষিণ কোরিয়ার পোস্কো-দাইয়ুর সঙ্গে গভীর ব্লক ১২-এ তেল-গ্যাসসহ অন্যান্য অপ্রাণিজ খনিজসম্পদ অনুসন্ধানের চুক্তি হয়েছে। ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০’ মহাপরিকল্পনায় সমুদ্র অর্থনীতিকে অগ্রাধিকার ও গুরুত্ব বিবেচনায় পাঁচ ধরনের কর্মকৌশলও নির্ধারণ করা হয়েছে। বিগত জুনে জাতিসংঘে অনুষ্ঠিত ‘সমুদ্রতলের সম্পদে টেকসই উন্নয়ন ঘটিয়ে প্রাপ্ত সুবিধার ন্যায়সংগত বণ্টন : স্বল্পোন্নত, ভূবেষ্টিত স্বল্পোন্নত এবং উন্নয়নশীল ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর সুযোগ’ শীর্ষক ব্রিফিং অনুষ্ঠানে দেশের পক্ষ থেকে জাতিসংঘের সহযোগিতার আবেদন জ্ঞাপিত হয়।
অস্ট্রেলিয়া সমুদ্রসম্পদ থেকে বর্তমানে প্রায় ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে। ২০২৫ সালে অস্ট্রেলিয়া যেমন এ খাত থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার আয় করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে; তেমনই বাংলাদেশও এ ধরনের সমুদ্র অর্থনীতিকে সুসংহত-পর্যাপ্ত-সুগভীর মনোযোগে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের নতুন এ খাতকে যথাযথ বিবেচনায় আনতে হবে।
১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) আয়োজিত সি-উইডজাত পণ্য উৎপাদন ও জনপ্রিয়করণ শীর্ষক কর্মশালায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী সুনীল অর্থনীতির বিকাশে সি-উইডসহ অন্যান্য সমুদ্রসম্পদের সম্ভাবনা কাজে লাগানোর আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘সমুদ্রসম্পদ সি-উইড অপ্রচলিত হলেও এর বহু গুণাগুণ রয়েছে। ওষুধ, প্রসাধনী ও ভেষজসামগ্রী এবং পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার তৈরিসহ সি-উইডের বহুমুখী ব্যবহারের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এখন সি ফুডের জন্য আলাদা রেস্তোরাঁ তৈরি হয়েছে। সামুদ্রিক মাছের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রচলিত সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদের পাশাপাশি সি-উইডের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সংশ্লিষ্টদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। সি-উইডের বহুমুখী ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে খাদ্যপণ্য হিসাবে এর স্বাদ ও পরিবেশনের বিষয়টি আলাদাভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। সি-উইডজাত খাবারে আমাদের অভ্যস্ততা বাড়াতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রায় সমপরিমাণ সমুদ্র এলাকায় আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সুনীল অর্থনীতির অপার সম্ভাবনা উন্মুক্ত হয়েছে। সমুদ্র এলাকায় আমাদের প্রচলিত ও অপ্রচলিত মৎস্যসম্পদ এবং খনিজসম্পদ রয়েছে। সমুদ্রসম্পদ আহরণ হবে দেশের উন্নয়নের আরেকটি বিশাল অধ্যায়। সমুদ্রের গভীরের মাছ, সামুদ্রিক শৈবাল, খনিজসম্পদ আমাদের কাজে লাগাতে দক্ষ জনসম্পদ তৈরি করতে হবে।’
সমুদ্র অর্থনীতি (ব্লু-ইকোনমি) সংশ্লিষ্ট গবেষণা ও সম্পদ আবিষ্কার-আহরণ-প্রয়োজনীয় ব্যবহার এবং দেশের সামগ্রিক আর্থসামাজিক উন্নয়নে এর অবদানকে কতটুকু যৌক্তিক ও তাৎপর্যপূর্ণ করা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখার প্রয়োজনীয়তা অবশ্যম্ভাবী। শুধু পরিকল্পনায় নয়; সচল অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি বিস্তারে সমুদ্র অর্থনীতির কার্যকর দৃশ্যপট দ্রুততম সময়ের মধ্যে নতুনরূপে পরিগৃহীত না হলে ভবিষ্যতে এক্ষেত্রে প্রবল পিছিয়ে পড়ার অযৌক্তিক-অযাচিত যুক্তিগুলো বিপুল প্রখরতা পাবে।
লেখক : শিক্ষাবিদ, সাবেক উপাচার্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়