বৈসাবি শুরু : উৎসবের আনন্দে মুখর পাহাড়

মত ও পথ ডেস্ক

বৈসাবি উৎসব
বৈসাবি উৎসব। ফাইল ছবি

পাহাড় এখন উৎসবের রঙে বর্ণিল। বর্ষবিদায় ও বরণ ঘিরে পাড়ায় পাড়ায় আনন্দের আমেজ। আজ মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে পাহাড়ের সবচেয়ে বড় উৎসব ‘বৈসাবি’ (বৈসু, সাংগ্রাই, বিজু)। এই উপলক্ষে বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

করোনার কারণে গত দুই বছর সীমিত পরিসরে এই উৎসব পালন করেছিল পাহাড়ি জনগোষ্ঠী। মহামারির প্রকোপ কমায় এবার ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

universel cardiac hospital

পার্বত্য চট্টগ্রামে সম্প্রদায়ভেদে এই উৎসবের ভিন্ন নাম রয়েছে। চাকমারা বিজু, মারমারা সাংগ্রাই, ত্রিপুরারা বৈসুক, তঞ্চঙ্গ্যারা বিষু, অহমিয়ারা বিহু ও চাক, ম্রো, খিয়াং ও খুমিরা চাংক্রান নামে উৎসবটি পালন করে। সমতলের বাসিন্দাদের কাছে এই উৎসব ‘বৈসাবি’ নামে পরিচিত।

বাংলা বর্ষপঞ্জিকা অনুযায়ী চৈত্রের শেষের আগের দিন আজ মঙ্গলবার চাকমা, তঞ্চঙ্গ্যা ও ত্রিপুরাদের ফুল বিজু। কাল বুধবার মূল বিজু। এর পরের দিন অনুষ্ঠিত হবে পয়লা বৈশাখ। আর মারমা পঞ্জিকা অনুযায়ী আগামী বৃহস্পতিবার সাংগ্রাইং আবাহন বা মূল সাংগ্রাইংয়ের শুরু। আমাদের জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

খাগড়াছড়ি

বৈসাবি উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার সকালে স্বনির্ভর এলাকা থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করেছে জেলা পরিষদ। তা টাউন হলে এসে শেষ হবে।

এ ছাড়া বিজু উপলক্ষে তিন দিনের উৎসব আয়োজন করেছে চাকমা সম্প্রদায়। আজ ফুল বিজু। দ্বিতীয় দিন মূল বিজু এবং তৃতীয় দিন নুয়বজর। চাকমারা ফুল বিজুর দিনে নদী, ছড়া ও ঝরনায় ফুল ভাসিয়ে থাকে।

বুধবার শুরু হবে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর তিন দিনব্যাপী বৈসু উৎসব। প্রথম দিন হারি বৈসু, দ্বিতীয় দিন বৈসুমা ও শেষ দিন আতাদাক বা বিছিকাতাল।

মারমাদের চার দিনব্যাপী উৎসব শুরু হবে ১৪ এপ্রিল। প্রথম দিন সাংগ্রাই, দ্বিতীয় দিন আক্যে, তৃতীয় দিন আতাদা ও শেষ দিন আতং।

বান্দরবান

জুর ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে আজ বান্দরবানে শুরু হবে সর্বজনীন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উৎসব বৈসাবি। সাংগ্রাইং, বিজু, বৈসু ও পয়লা বৈশাখ মিলে চার দিনব্যাপী উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে বান্দরবানে।

জেলা উৎসব উদ্‌যাপন পরিষদের সূত্রে জানা যায়, বৈসাবি উপলক্ষে ১১টি পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে কাল বুধবার সকাল ৮টায় জেলা শহরের রাজার মাঠ থেকে মাহা সাংগ্রাইং মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হবে। জেলা শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে শোভাযাত্রা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট (কেএসআই) প্রাঙ্গণে এসে শেষ হবে। সেখানে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও পূজার আয়োজন করা হবে।

রাঙামাটি

বৈসাবিকে ঘিরে রাঙামাটিতে চলছে নানা আয়োজন ও প্রস্তুতি। বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, বিষু, বিহু ও সাংক্রান উপলক্ষে সম্প্রদায়ভেদে পাঁচ থেকে সাত দিন চলবে উৎসব। গত রোববার বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, বিষু, বিহু ও সাংক্রান উদ্‌যাপন কমিটির উদ্যোগে উৎসব শুরু হয়। ফুল ভাসানোর পর চাকমা সম্প্রদায়ের লোকজন কাল বুধবার থেকে অতিথিদের আপ্যায়ন করবেন। মূল আকর্ষণ পাজন (পাচন)। ২০ থেকে ৪০ প্রকারের সবজি মিশিয়ে তৈরি করা হয় এই পদ। বৃহস্পতিবার শেষ দিনে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে পূজা–অর্চনা করা হবে।

শেয়ার করুন