কল ড্রপ নিয়ে অসন্তোষ টেলিযোগাযোগমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

অব্যবহৃত ইন্টারনেট ডেটা ফেরত না দেওয়া ও কল ড্রপ হওয়াসহ মোবাইল অপারেটরদের সেবার নিম্নমান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

তিনি বলেন, ‘গ্রাহকেরা টাকা দিয়ে ইন্টারনেট কিনে তা ব্যবহার করতে পারছেন না। এটা একধরনের প্রতারণা।’

universel cardiac hospital

অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশ (অ্যামটব) ও বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম (বিআইজিএফ) টেলিকম খাতের করনীতি ও ইকোসিস্টেম নিয়ে যৌথভাবে আয়োজিত নীতি–সংলাপে এসব কথা বলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। আজ বুধবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে সংলাপটি অনুষ্ঠিত হয়।

সংলাপে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘বেশ কিছু অপারেটরের সিম দিয়ে আমি ঠিকভাবে কথা বলতে পারিনি। কল করলে কথার মাঝখানে তা কেটে যায়। কল ড্রপের জন্য গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত। ক্ষতিপূরণ না দিলে তা যৌক্তিক হবে না। এটা কোনো ব্যবসায়িক নীতি হতে পারে না।’

অব্যবহৃত ইন্টারনেট ডেটা ফেরত না দেওয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন মন্ত্রী। বলেন, ‘গ্রাহক টাকা দিয়ে ইন্টারনেট কিনে তা ব্যবহার করতে পারছেন না। এটা একধরনের প্রতারণা। এটা কোনোমতেই চলতে দেওয়া উচিত না। সেবা নিয়ে আপনারা গ্রাহকদের মনের কথা বোঝার চেষ্টা করুন।’

মোবাইল অপারেটরদের সেবার মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শ্যামসুন্দর সিকদারও। তিনি বলেন, ‘মোবাইল অপারেটরদের সেবার মানে সাংঘাতিক ঘাটতি আছে। এসব নিয়ে ইতিমধ্যে আমি কিছু মামলা খেয়ে বসে আছি। গ্রাহকেরা সম্পূর্ণ ইন্টারনেট ব্যবহার করার আগেই তার মেয়াদ শেষ হয়ে যায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা একধরনের প্রতারণা। এভাবে করা আয় থেকে সরকারের রাজস্বের দরকার নেই। গ্রাহকদের তাদের প্রাপ্যটা দেওয়া উচিত।’

দুর্বল নেটওয়ার্ক নিয়েও অভিযোগ করেন শ্যামসুন্দর সিকদার। তিনি বলেন, কোম্পানিগুলো এখনো ফাইবার অপটিকের ব্যবহার কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে করছে না। এর জন্যও সেবার মান কম হচ্ছে বলে জানান তিনি।

নীতি-সংলাপে টেলিকম খাতের করব্যবস্থা ও ইকোসিস্টেমকে ব্যবসাবান্ধব করার আহ্বান জানিয়েছেন এই খাতের ব্যবসায়ী ও নীতিনির্ধারকেরা। তাঁরা বলেন, প্রতিবেশী দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মোবাইল খাতে কর তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। অপারেটরদের বিনিয়োগের বিপরীতে রিটার্ন সন্তোষজনক নয়। অন্যদিকে মোবাইল ভয়েস ও ইন্টারনেটের দাম বিশ্বের অন্যান্য দেশের চেয়ে কম। এভাবে করের ভারে জর্জরিত থাকলে এই খাতের কোম্পানিগুলোর টিকে থাকাই কঠিন হয়ে যাবে।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিআইজিএফের চেয়ারপারসন এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু। এতে টেলিকম করনীতি ও ইকোসিস্টেম নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রবি আজিয়াটার প্রধান করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স কর্মকর্তা শাহেদ আলম ও এরিকসন বাংলাদেশের এ দেশীয় ব্যবস্থাপক আবদুস সালাম।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মো. খলিলুর রহমান, বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, রবির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সিএফও এম রিয়াজ রাশিদ, বাংলালিংকের প্রধান করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স কর্মকর্তা তাইমুর রহমান, গ্রামীণফোনের ভারপ্রাপ্ত সিসিএও হোসেন সাদাত, ফাইবার অ্যাট হোমের চিফ টেকনোলজি অফিসার সুমন আহমেদ সাবির, এমটব মহাসচিব এস এম ফরহাদ প্রমুখ।

শেয়ার করুন