আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠান ঘিরে জঙ্গি হামলা বা নাশকতার কোনো আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর রমনার বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের নিরাপত্তাব্যবস্থা পরিদর্শন করতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে র্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, অতীতের ভুলত্রুটি ও ব্যর্থতার গ্লানি ভুলে নতুন করে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় উদ্যাপিত হয় বাংলা নববর্ষ। পয়লা বৈশাখকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অন্যান্য বছরের মতো এবারও র্যাব ফোর্সেস বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে। নববর্ষের অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিরাপত্তা জোরদার করতে নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় পর্যাপ্তসংখ্যক র্যাব সদস্য মোতায়েন থাকবে।
র্যাবের মহাপরিচালক বলেন, রাজধানীর রমনার বটমূল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্রসরোবর, শিল্পকলা একাডেমি, বিআইসিসি ভবন, নজরুল একাডেমি, উত্তরা মাঠসহ বিভিন্নস্থানে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এসব অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাব বিশেষ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। টিএসসি, শাহবাগ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এবং রমনা বটমূলে আউটার ও ইনার প্যারামিটারে বিভক্ত করা হয়েছে। এসব এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত পরীক্ষণ নিরাপত্তাচৌকি (চেকপোস্ট) টহল ও পর্যবেক্ষণ (অবজারভেশন) পোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। রমনা বটমূল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, চারুকলা ইনস্টিটিউটসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে র্যাবের বোমা উদ্ধার ও নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড দ্বারা সুইপিং সম্পন্ন করা হবে।
র্যাব প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, সারাদেশে নববর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠান চলাকালে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য থাকবে র্যাবের কন্ট্রোল রুম, স্ট্রাইকিং রিজার্ভ, আউটার প্যারিমিটার টহল, মোটরসাইকেলে টহল, হেঁটে টহল (ফুট প্যাট্রোল), বোট প্যাট্রোলিং, সি স্কুটার, ভেহিকেল স্ক্যানার, অবজার্ভেশন পোস্ট, নিরাপত্তাচৌকি এবং সিসিটিভি মনিটরিং। বিভিন্ন অনুষ্ঠানস্থল ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সুইপিং পরিচালনার পাশাপাশি র্যাবের বোমা উদ্ধার ও নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য সার্বক্ষণিকভাবে প্রস্তুত রয়েছে। কোনো নাশকতা, হামলা মোকাবিলায় র্যাবের কমান্ডো দলকে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া র্যাবের হেলিকপ্টার সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছে।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, র্যাবের ব্যাটালিয়ন নিজ নিজ নিয়ন্ত্রণকক্ষের মাধ্যমে তাদের জনপ্রতিনিধি ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করবে। র্যাব সদর দপ্তরে নিয়ন্ত্রণকক্ষের (হটলাইন নম্বর: ০১৭৭৭৭২০০২৯) মাধ্যমে ঢাকাসহ সারাদেশে নিরাপত্তাব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ ও সমন্বয় করা হবে। দেশের সব মহানগর জেলা শহর ও উপজেলা পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় নিরাপত্তাচৌকি বসানো হবে। গোয়েন্দা তথ্য, সাইবার মনিটরিংসহ অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণ করে বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের জঙ্গি হামলার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবু গোয়েন্দা নজরদারি ও সাইবার–জগতে মনিটরিং বাড়ানোর মাধ্যমে জঙ্গিদের যেকোনো ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিতে প্রস্তুত রয়েছে র্যাব। ভার্চ্যুয়াল জগতে বাংলা নর্ববর্ষকে কেন্দ্র করে যেকোনো ধরনের গুজব, উসকানিমূলক ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানো প্রতিরোধেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে র্যাব সাইবার মনিটরিং টিম অনলাইনে সার্বক্ষণিক নজরদারি অব্যাহত রাখছে। অনুষ্ঠানস্থল ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আসা নারীদের উত্ত্যক্ত ও যৌন হয়রানি রোধে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করবে। কোনো নারীকে হেনস্তা করা হলে তার বিরুদ্ধে র্যাব কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।