বর্তমানে দেশের অর্থনীতিতে বড় কোনো শঙ্কা নেই এবং অর্থনীতির প্রায় সব সূচকই ইতিবাচক। করোনা মহামারির ধাক্কা সামলে শিল্প ও সেবা খাতগুলো ক্ষতি পুনরুদ্ধার করতে শুরু করেছে। তবে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল, গ্যাস ও সারের দাম বৃদ্ধির কারণে সরকারের ভর্তুকিতে চাপ বাড়ছে।
পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ভোক্তাদের মধ্যে অর্থপ্রবাহ বাড়াতে উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন ব্যয় বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে। এসব বিবেচনায় নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় আগামী অর্থবছরে প্রাথমিকভাবে ছয় লাখ ৭৯ হাজার ৩৫০ কোটি টাকার বাজেট প্রাক্কলন করেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল রবিবার বাজেট ব্যবস্থাপনা ও সম্পদ কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকে বাজেটের একটি রূপরেখা তুলে ধরবেন অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা। রূপরেখায় বাজেটের প্রাথমিক প্রাক্কলন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে তুলে ধরা হবে। চলতি অর্থবছরে ছয় লাখ তিন হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়।
সূত্র জানায়, অর্থনীতি দ্রুত পুনরুদ্ধার হবে—এমন আশায় আগামী অর্থবছরে ছয় লাখ ৭৯ হাজার ৩৫০ কোটি টাকার বাজেট দিতে চাইছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এটি দেশের জিডিপির ১৫.৩৮ শতাংশ। আর চলতি অর্থবছরের বাজেট থেকে ৭৫ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা বেশি।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, আগামী অর্থবছরে মোট আয় প্রাক্কলন করা হয়েছে চার লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৯.৯ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে মোট আয় ধরা হয়েছে তিন লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে মোট আয় বাড়ছে ৪৮ হাজার কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে আগামী অর্থবছরের মোট আয়ের মধ্যে এনবিআরকে তিন লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি জিডিপির প্রায় ৮.৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছর এনবিআরকে তিন লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া আছে। সে হিসাবে লক্ষ্যমাত্রা ৪০ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ ছাড়া আগামী বাজেটে মোট আয়ের মধ্যে নন-এনবিআর থেকে প্রাক্কলন করা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। করবহির্ভূত রাজস্ব ৪৯ হাজার কোটি টাকা ধরা হয়েছে।
আগামী অর্থবছরের প্রাক্কলিত বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে দুই লাখ ৪২ হাজার ৯৪১ কোটি টাকা। এটি জিডিপির ৫.৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘাটতির পরিমাণ দুই লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। সে হিসাবে ঘাটতি বাড়ছে ২৮ হাজার ২৬০ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ধরা হয়েছে দুই লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা আগামী অর্থবছরের জন্য দুই লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকার এডিপির প্রস্তাব করছেন।
আগামী অর্থবছরের প্রাক্কলিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭.৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৭.২ শতাংশ। আগামী অর্থবছরের প্রাক্কলিত মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫.৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রা ৫.৩ শতাংশ।