আগামী দুই মাসের মধ্যে, অর্থাৎ জুন মাসের আগেই মুজিবনগরের উন্নয়নকাজ নতুন করে শুরু হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, মুজিবনগর উন্নয়ন প্রকল্প একনেকে চলে গেছে। আগামী সপ্তাহে একটি দল সরেজমিনে পরিদর্শনের পর নতুন করে প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হবে।
আজ রোববার ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার বৈদ্যনাথতলা আম্রকাননে শহীদ স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী।
মুজিবনগরকে রাষ্ট্রীয় দিবস করা হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এটির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ক্যাবিনেটে সিদ্ধান্ত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে এটি বিবেচনা করেছেন।
কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধার ভাতা বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে সরাসরি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামে ভাতা যাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধার আইডি কার্ডের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা সনদের অমিল থাকলে, সে ক্ষেত্রে তাদের ভাতা সাময়িকভাবে বন্ধ থাকতে পারে।
কাগজপত্র ঠিক করার সঙ্গে সঙ্গে তাদের টাকা নিজ নিজ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চলে যাবে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘ভাতা ডিজিটাল নিয়মে যাওয়ার কারণে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। আমাদের কাছে যারা যাচ্ছেন, তাদের কাগজপত্র ঠিক করে দিচ্ছি। জাতীয় পরিচয়পত্র ও মুক্তিযুদ্ধ সনদ হুবহু এক হতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর সঙ্গে বৈদ্যনাথতলা আম্রকাননে শহীদ স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাসিম। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একাত্তরে মুজিবনগর সরকার গঠিত হওয়ার পর ৯ মাসের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছে। সেই স্বাধীন রাষ্ট্রকে যারা অকার্যকর ও ব্যর্থ বানাতে চায়, রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায়, সেই বিএনপি–জামায়াত যেন মনে রাখে, শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির মতো অবস্থা বাংলাদেশে হওয়ার সুযোগ নেই।
বাহাউদ্দিন নাসিম আরও বলেন, শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি দেউলিয়া হওয়ার কারণ হলো তাদের অর্থনীতি পর্যটনশিল্পের ওপর নির্ভরশীল। তারা খাদ্য আমদানির ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের অর্থনীতি, প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধি অনেক গুণে শক্তিশালী। বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ। বাংলাদেশ ব্যাংকে যে রিজার্ভ জমা আছে, তা পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। বিএনপি–জামায়াতের অপপ্রচারের বিষয়ে বাংলাদেশের মানুষকে সচেতন থাকতে হবে।
পরে সাড়ে ১১টায় শেখ হাসিনা মঞ্চে জনসভা হয়। মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসন আয়োজিত জনসভায় সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাসিম।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেকের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক ও আফজাল হোসেন। উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, আওয়ামী লীগের সদস্য পারভীন জামান, গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার প্রমুখ।