প্রস্তাবিত আইন গণমাধ্যমের বিকাশ সংকুচিত করবে: সম্পাদক পরিষদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় সংসদে উত্থাপিত গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলি) আইন গণমাধ্যমের বিকাশ সংকুচিত করবে বলে মনে করে সম্পাদক পরিষদ। আজ মঙ্গলবার সংগঠনটি এক বিবৃতির মাধ্যমে জানায়, এ আইনের ৫৪টি ধারার মধ্যে ৩৭টিই সাংবাদিকবান্ধব নয়।

সংগঠনের সভাপতি মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, কোভিড-১৯ মহামারির অভিঘাতে সংবাদপত্র শিল্প ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দেশ-বিদেশে অনেক দৈনিক পত্রিকা ছাপা বা প্রিন্ট সংস্করণ কমাতে বা বন্ধ করতে শুরু করেছে।

universel cardiac hospital

এ ছাড়া বিজ্ঞাপনের আয় হ্রাস পেয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। ছাপা পত্রিকা স্থানান্তরিত হয়েছে ডিজিটাল প্লাটফর্মে। এমন পরিস্থিতিতে কঠিন সময় পার করছে ছাপা পত্রিকা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সংবাদপত্রের এ সংকটের মধ্যেই গত ২৮ মার্চ জাতীয় সংসদে গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলি) আইন, ২০২২ উত্থাপন করা হয়। প্রস্তাবিত আইনটি বিশ্লেষণ করে এর ৫৪টি ধারার ৩৭টি-ই সংবাদিকবান্ধব নয় বলে মতামত ব্যক্ত করা হয়েছে।

সম্পাদক পরিষদ মনে করে, প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন, ২০২২’র মাধ্যমে গণমাধ্যমকর্মীদের স্বার্থ রক্ষার নামে গণমাধ্যম শিল্প ও গণমাধ্যমকর্মীদের আমলাতন্ত্রের অধিকতর নিয়ন্ত্রণে আনা হচ্ছে।

গণমাধ্যম আদালত ও আপিল আদালত গঠনের মাধ্যমে সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য আইনি জটিলতা সৃষ্টি হবে। একই সঙ্গে এ ধরনের আদালত স্বাধীনভাবে গণমাধ্যম পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে।

সম্পাদক পরিষদ বলছে, এ আইন বাস্তবায়ন হলে এডিটোরিয়াল ইনস্টিটিউশন পুরোপুরি ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

আইনে মালিক ও গণমাধ্যমকর্মীদের পরস্পরকে প্রতিপক্ষ বানানো ও এর ফলে তাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।

বলা হয়, আইনে সরকারকে সংবাদপত্র বন্ধের অধিকার দেওয়া হয়েছে, যা অতীতের নিবর্তনমূলক আইন স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্টে ছিল এবং পরবর্তীতে যা বাতিল করা হয়।

এ ছাড়া সম্পাদক পরিষদ মনে করে, সংবাদপত্র শিল্প ব্যক্তিমালিকানাধীন, কিন্তু প্রস্তাবিত আইনে গণমাধ্যম পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকারের হস্তক্ষেপের পথ উন্মোচন করা হয়েছে। আইনটি পাস হলে তা স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্তসহ সংবাদপত্রের বিকাশ সংকুচিত করবে।

এরকম আইন চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন। সার্বিকভাবে এ আইন গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীদের স্বার্থের বিরুদ্ধে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

শেয়ার করুন