গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ড. কামাল হোসেন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না ও কমিউনিস্ট পার্টিসহ বামদলগুলো সরকার পতনের আন্দোলনে এখন বিএনপি-জামায়াত জোটের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, দেশের কতিপয় রাজনৈতিক নেতা দেশের কোনো সংকটপূর্ণ মুহূর্তে কখনোই জনগণের পাশে থাকেন না। জনগণের পাশে দাঁড়ানোর পরিবর্তে তারা বেশি ব্যস্ত থাকেন সরকার পতনের আন্দোলন গড়ে তুলতে। মান্না, ড. কামাল হোসেন, কমিউনিস্ট পার্টি ও বামদলগুলো আওয়ামী লীগের সরকারকে উচ্ছেদ করার আন্দোলন গড়ে তুলতে এখন বিএনপি-জামায়াত জোটের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা আজ বুধবার গণভবন থেকে কৃষক লীগের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন। খবর বাসসের।
প্রধানমন্ত্রী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর তনয়া শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামাত জোটের মদদপুষ্ট কয়েকটি রাজনৈতিক দল দেশের মানুষকে আবারও অন্ধকার ও দুর্দশার যুগে নিয়ে যাওয়ার জন্যই আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, কি কারণে তারা সরকারকে উচ্ছেদ করতে চায়? আসলে তারা জনগণকে এই সরকার যে সব সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে, তা থেকে বঞ্চিত করতে চায়। এটাই কি তাদের আসল উদ্দেশ্য?
শেখ হাসিনা প্রশ্ন রাখেন, আওয়ামী লীগ সরকার কি দোষ করেছে যে, তারা সরকারকে উচ্ছেদ করতে চায়? আমার প্রশ্ন হলো- তারা কি দেশের এই ক্রম-উন্নয়ন পছন্দ করছেন না? মনে হচ্ছ, সে জন্যই তারা এই সরকারের উচ্ছেদ ঘটাতে চায়।
তিনি বলেন, সরকার দেশের জনগণের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং তৃণমূল পর্যায়ের ও গ্রামীণ এলাকার মানুষ তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের লক্ষ্যে গৃহীত সরকারের পদক্ষেপের সুফল পাচ্ছে। এ জন্যই তাদের শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাত করা প্রয়োজন। তাদের কাছে আমার প্রশ্ন- আমাদের অপরাধটা কি?
বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের কি দোষ, তারা কেন আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায়? তারা যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন তারা জনগণের অর্থ লুট করেছে, মানুষ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরকে হত্যা করেছে। পূর্ণিমা, মাহিমাসহ অনেকের ওপর নির্যাতন করেছে। জনগণ কি ২০১৩ ও ২০১৫ সালের তাদের নৃশংসতা ভুলে গিয়েছে?
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। অথচ আমাদের দেশের একটি মহল ষড়যন্ত্র করে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে এবং সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার কৃষি ইস্যুতে গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে- যাতে করে দেশ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ইস্যুর পাশাপাশি খাদ্য উৎপাদনে অধিকতর ইতিবাচক ফলাফল পেতে পারে। এ ব্যাপারে সরকার দেশের গণমানুষের কল্যাণে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
দেশের কৃষি ও কৃষকদের কল্যাণে তার সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার কৃষি ও কৃষকদের ব্যাপারে অনেক বেশি আন্তরিক। কৃষকরা যেন ন্যায্য মূল্যে তাদের তাদের উৎপাদিত পণ্যের দাম পেতে পারেন, সেজন্য আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।
কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি।
কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি ড. এম এ জলিল, মোতাহার হোসেন মোল্লা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মানু ও হারুন অর রশীদ অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে কৃষক লীগের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একটি অডিও-ভিজ্যুয়াল প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কৃষক লীগের একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।