অটিজম নিয়ে আলোচনায় রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়কে সম্পৃক্ত করে দেশে জাতীয় সচেতনতা তৈরি করা গেছে’ বলে মনে করছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সদস্য সায়মা ওয়াজেদ। তিনি আজ রোববার আয়োজিত ‘প্রাচীর পেরিয়ে, স্টিফেন শোর- এর আত্মজীবনী ও অটিজম নিয়ে সায়মা ওয়াজেদের সাথে আড্ডা’ শিরোনামের অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় এচিভমেন্ট (অর্জন) হচ্ছে, সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্যায়, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীরা অটিজম সচেতনতামূলক কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত হয়েছেন। সাধারণ মানুষের মধ্যে অটিজম নিয়ে যে ধরনের নেতিবাচক স্টিগমা (বিভ্রান্তি) ছিল, সেটি থেকেও আমরা মুক্ত হতে পেরেছি।
ভার্চুয়াল ওই আলাপচারিতায় অটিজম নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন যুক্তরাষ্ট্রের অধ্যাপক স্টিফেন মার্ক শোর। অনুষ্ঠানে তাঁর লেখা ‘বিয়ন্ড দ্য ওয়াল’র বাংলা সংস্করণ ‘প্রাচীর পেরিয়ে’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এতে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। সূচনা ফাউন্ডেশন ও ‘সেন্টার ফর রিসার্চ এন্ড ইনফরমেশন’ (সিআরআই) যৌথভাবে এর আয়োজন করে।
অটিজম বিশেষজ্ঞ সায়মা ওয়াজেদ বলেন, আমাদের অনেক ধরনের সীমাবদ্ধতা আছে। সেগুলো এক ধরনের শক্তি হিসেবে দেখা দিয়েছে। এটাও অটিজম সচেতনতা আন্দোলনের একটি অর্জন। অটিজম নিয়ে দেশের সাধারণ মানুষের মনোভাবের পরিবর্তন হয়েছে।
তিনি বলেন, অটিজম আমাদের সমাজেরই এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাদেরকে (অটিজমে আক্রান্ত) আরও সুযোগ করে দেওয়া, তাদের জন্য আরও অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা উচিত- এটা এখন সবাই বুঝতে পেরেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে মনোবিজ্ঞান ও মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে উচ্চশিক্ষা শেষে সেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান সূচনা ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করে দেশে অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের বিষয়ে সচেতনতামূলক কাজ শুরু করছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি সায়মা। তিনি বাংলাদেশে অটিজম বিষয়ক জাতীয় কমিটির চেয়ারপারসন। স্টিফেন মার্ক শোর বইটির অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে সূচনা ফাউন্ডেশন থেকে।
সায়মা বলেন, দেশে শুধু স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মধ্যেই অটিজম ও অন্যান্য প্রতিবন্ধীতাকে রাখা হয়নি। সরকার অটিজম নিয়ে মাল্টি সেক্টরাল এপ্রোচ নিয়েছে। ২০টির বেশি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ অটিজম সচেতনতা বিষয়ক সরকারি তৎপরতায় সম্পৃক্ত। এটি নিয়ে আমাদের একটি জাতীয় কর্মকৌশল রয়েছে। এ কর্মকৌশল শুধু ব্যবস্থাপনায় সীমাবদ্ধ নয়, এতে প্রতিবন্ধীদের চাকরি ও অন্যান্য জীবনমুখি সমস্যা সমাধানের কথা বলা আছে।
তিনি বলেন, অটিজম আক্রান্ত শিশুদের জন্য বাবা-মায়ের পাশাপাশি দেশের সরকার ও নীতি নির্ধারকদেরও কিছু করার আছে। প্রাচীর ভেঙে সবাইকে সামনে আসতে হবে।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথের (এনআইএমএইচ) সহযোগী অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন আহমেদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর জেইন পিয়ার্স, ইনসাইটস নলেজের নির্বাহী কর্মকতা নিগার রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।