বাংলাদেশ দল সবচেয়ে ভালো খেলে ওয়ানডে ক্রিকেটে। এই সংস্করণে ধারাবাহিকভাবে উন্নতিও হচ্ছে। কিন্তু বাকি দুই সংস্করণে ওয়ানডের মতো ভালো করতে পারে না। তাই টেস্ট এবং টি২০ ক্রিকেটের ওপর জোর দিচ্ছে বিসিবি।
টেস্টে ফোকাসটা বেশি থাকবে বলে জানান বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। শনিবার বিসিবির ইফতার পার্টিতে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে এ নিয়ে এক দফা মিটিংও হয়ে গেছে তার। সেখানে লাল বলের খেলা নিয়ে ক্রিকেটারদের মতামত জেনেছেন পাপন। টেস্টে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর ব্যাপারে বোর্ড সভাপতি নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস। ম্যাচ ফি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানোর কথা ভাবছে বোর্ড।
বিসিবির পরিকল্পনা টেস্ট দলকে আলাদা করে ফেলা। এজন্য টেস্ট ক্রিকেটারের সংখ্যা বাড়াতে বলা হয়েছে। জালাল ইউনুস বলেন, ‘টেস্টে উন্নতি করতে হলে দলকে আলাদা করা জরুরি। সেটা করতে হলে বিশেষজ্ঞ ক্রিকেটার লাগবে। একটি পূর্ণাঙ্গ টেস্ট দল গড়ার মতো যথেষ্ট ক্রিকেটার আমাদের হাতে নেই। বোর্ড সভাপতি টেস্ট ক্রিকেটার বাড়াতে নির্বাচকদের কাজ করতে বলেছেন। সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর ব্যাপারেও নীতিগতভাবে একমত হয়েছেন সভাপতি। আকর্ষণীয় ম্যাচ ফি দেওয়া গেলে টেস্টের প্রতি আগ্রহ বাড়বে খেলোয়াড়দের। বোর্ডে আলোচনা করে এ ব্যাপারে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
বর্তমানে টেস্টের ম্যাচ ফি ছয় লাখ টাকা। ওয়ানডেতে তিন আর টি২০-র ম্যাচ ফি দুই লাখ টাকা। টেস্টের ম্যাচ ফি ১০ লাখ টাকায় উন্নীত করা হলে ক্রিকেটারদের আগ্রহ বাড়তে পারে। বিসিবির এই পরিকল্পনাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অধিনায়ক মুমিনুল হক, ‘এই ভাবনা টেস্ট ক্রিকেটারদের উজ্জীবিত করবে। এখন অনেকেই শুধু এক ফরম্যাট খেলে। সম্মানজনক ম্যাচ ফি থাকলে খেলোয়াড়দের দুশ্চিন্তা কমে যাবে। সুযোগ-সুবিধা বাড়ালে রেজাল্ট দেওয়ার বাধ্যবাধকতাও তৈরি হবে। সামনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোম সিরিজ, যেখানে ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে আমাদের। এক কথায় জিততে হবে।’
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের কারণে ম্যাচ সংখ্যা বেড়েছে। দুই বছর সাইকেলে ১৬টি ম্যাচ রয়েছে। এ ছাড়াও দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলার সুযোগ উন্মুক্ত রেখেছে আইসিসি। জিম্বাবুয়ে, আয়ারল্যান্ড, আফগানিস্তান ছাড়াও অতিরিক্ত টেস্ট খেলা যাবে যে কোনো দলের সঙ্গে। তাই সারা বছরই টেস্ট ক্রিকেটারদের খেলার ভেতরে রাখারও পরিকল্পনা নিচ্ছে বিসিবি।
জালাল ইউনুস বলেন, ‘এক সিরিজ থেকে অন্য সিরিজে সময়ের ব্যবধান বেশি হলে খেলায় যাতে প্রভাব না পড়ে সেজন্য টেস্ট ক্রিকেটারদের জন্য বিশেষ ক্যাম্প এবং বিদেশে ম্যাচ খেলার ব্যবস্থা করা হবে। যে কোনো দেশে হতে পারে খেলা।’
টেস্টে সত্যিকারের উন্নতি করতে হলে কাগজে-কলমের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন রূপ দিতে হবে বিসিবিকে।