চ্যাম্পিয়নস লিগে রোমাঞ্চকর এক রাত উপহার দিলো ম্যানচেস্টার সিটি-রিয়াল মাদ্রিদ। দুই হেভিওয়েটের লড়াইয়ে একে একে গোল হলো ৭টি। সব উত্তেজনা ছাপিয়ে শেষ হাসিটা হাসলো সিটি।
ইতিহাদ স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে শ্বাসরুদ্ধকর এক লড়াইয়ে রিয়ালকে ৪-৩ গোলে হারিয়েছে পেপ গার্দিওলার দল।
ম্যাচে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলেও রিয়াল ছিল অনেকটাই পিছিয়ে। ম্যানচেস্টার সিটির আক্রমণ ঠেকানো আর গোল শোধ করতে করতেই পুরো সময় পার হয়ে যায় কার্লো আনচেলত্তির দলের। একবারও তারা এগিয়ে যেতে পারেনি।
তবে এমন লড়াই যে হবে, শুরুতে কেউ আন্দাজ করতে পারেননি। ১১ মিনিটের মাথায় দুই গোলে এগিয়ে যায় সিটি। যে ব্যবধানটা আরও বাড়তে পারতো প্রথম আধা ঘণ্টাতেই। সেই ভয় পাশ কাটিয়ে অবিশ্বাস্য বেনজেমা আর সাহসী ভিনিসিয়াস জুনিয়রে দারুণভাবে লড়াইয়ে ফেরে রিয়াল।
ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই কেভিন ডি ব্রুইনের গোলে এগিয়ে যায় সিটি । রিয়াদ মাহরেজের ক্রস বক্সে পেয়ে চোখের পলকে ডাইভিং হেডে গোলটি করেন বেলজিয়ান মিডফিল্ডার।
একাদশ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করা গোলেও ছিল ডি ব্রুইনের অবদান। তার উঁচু করে বাড়ানো ক্রস দারুণভাবে জালে পাঠান গত শনিবার প্রিমিয়ার লিগে একাই ৪ গোল করা গ্যাব্রিয়েল হেসুস। ডেভিড আলাবা তার সঙ্গে লেগে থেকেও বলটা আটকাতে পারেননি।
২৬তম মিনিটে মাহরেজের বুলেট গতির শট পাশের জালে লাগে। তিন মিনিট পর ফিল ফোডেনের কোনাকুনি শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে গেলে আরও একবার বেঁচে যায় রিয়াল।
সফরকারীরা অবশেষে ঘুরে দাঁড়ায় ৩৩তম মিনিটে। আবারও সেই ভরসার নাম করিম বেনজেমা। বাঁ পায়ের দারুণ শটে গোলটি করেন রিয়ালের হয়ে সব মিলিয়ে ৬০০তম ম্যাচ খেলতে নামা বেনজেমা। নকআউট পর্বে এই নিয়ে টানা ৪ ম্যাচে জালের দেখা পেলেন ফরাসি ফরোয়ার্ড।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আবারও গোল খেতে বসেছিল রিয়াল। ডি-বক্সে ঢুকে মাহরেজের কোনাকুনি শট পোস্টে লাগে। ফিরতি বল ধরে ফোডেনের নেওয়া শট ঠেকিয়ে দেন দানি কারভাহাল।
চাপ ধরে রেখে ৫৩তম মিনিটে ৩-১ করে সিটি। ফের্নান্দিনিয়ো ডান দিক থেকে ক্রস বাড়ালে বক্সের মধ্যে হেডে বল জালে জড়ান ফোডেন।
তবে পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেনি রিয়াল। প্রায় একক নৈপুণ্যে বল নিয়ে গিয়ে বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শটে ব্যবধান কমান ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ভিনিসিয়াস জুনিয়র।
৭৪ মিনিটে আবারও সিটিকে দুই গোলে এগিয়ে দেন বের্নাদো সিলভা। জিনচেকোর অ্যাসিস্ট থেকে দারুণ এক গোল করেন পর্তুগিজ মিডফিল্ডার।
তবে ৮২তম মিনিটে সফল স্পট কিকে স্কোরলাইন ৪-৩ করে আবারও রিয়ালের আশা জাগান বেনজেমা। বক্সে হেড নিতে গিয়ে তিনি নিজেই ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। বেনজেমা ভুল করেননি।
ইউরোপসেরার মঞ্চে এই নিয়ে সবশেষ চার ম্যাচে দুটি হ্যাটট্রিকসহ বেনজেমার গোল হলো ৯টি। আসরে হলো ১৪ গোল, গোলদাতার তালিকার রবার্ট লেভানদোভস্কিকে ছাড়িয়ে বেনজেমা বসেছেন শীর্ষে।
শেষ পর্যন্ত রুদ্ধশ্বাস লড়াইটি শেষ হয়েছে ৪-৩ গোলেই। তবে সিটি জিতলেও একদম স্বস্তিতে থাকার উপায় নেই তাদের। ফিরতি লেগ যে হবে প্রতিপক্ষের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে।
আগামী বুধবার ঘরের মাঠে তাই ঘুরে দাঁড়ানোর ভালো সুযোগ থাকছে রিয়ালের।