ই-ভোটিং চালুর চিন্তা করছে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একইসঙ্গে প্রবাসীদের ভোটদানের সুযোগের পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছে এই নির্বাচন কমিশন। এ লক্ষ্যে সুপারিশ চূড়ান্ত করার জন্য কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খানকে (অব.) প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালকসহ ৯ সদস্যবিশিষ্ট এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সম্প্রতি গঠিত জাতীয় পরিচয়পত্র, ভোটার তালিকা এবং নির্বাচন ব্যবস্থাপনা তথ্য প্রযুক্তির প্রয়োগ কমিটিকে সুনির্দিষ্ট ১০টি কাজ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। কমিটির কার্যপরিধিতে ই-ভোটিংয়ের বিষয়টিও আনা হয়েছে।
কমিটির কার্যপরিধির মধ্যে রয়েছে, জাতীয় পরিচয়পত্র/স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র প্রস্তুত ও বিতরণসহ সার্বিক সুপারিশ প্রণয়ন; ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও প্রকাশ সংক্রান্ত সুপারিশ প্রণয়ন; মাঠ পর্যায়ে জাতীয় পরিচয়পত্র/স্মার্টকার্ড সেবা সহজীকরণের সুপারিশ প্রণয়ন; জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার তালিকার ডাটাবেজকে আরও সুরক্ষিত এবং শক্তিশালী করার জন্য প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়ন; জাতীয় পরিচয়পত্র ডাটাবেজের বর্তমান ডাটা সেন্টার পর্যবেক্ষণপূর্বক অধিকতর উন্নত ও আধুনিকীকরণ করার লক্ষ্যে সুপারিশ প্রণয়ন; নির্বাচন ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার ও প্রয়োগ সংক্রান্ত সুপারিশ; নির্বাচন কমিশন ভবন এবং নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ভবন ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রকল্প গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়নের পরামর্শ প্রদান; এবং প্রকল্প চিহ্নিতকরণ এবং তা প্রণয়নের পরামর্শ প্রদান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, কমিটির কার্যপরিধিতে ই-ভোটিং এবং প্রবাসীদের ভোটদানের বিষয়টি রাখা হয়েছে। এটা চূড়ান্ত বলা যাবে না। এই কমিটি সুপারিশ করবে তার পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। এক্ষেত্রে হয়তো অংশীজনের মতামতেরও প্রয়োজন পড়বে। তাছাড়া প্রবাসীদের ভোটদানের বিধান করতে হলে আমাদের আংশিক হলেও ই-ভোটিংয়ে যেতে হবে। আমাদের এক কোটির বেশি প্রবাসী রয়েছে। এত সংখ্যক ভোটারদের ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ করাটা সম্ভবপর নয়।
প্রসঙ্গত, বেশ আগেই বিভিন্ন মহলের পক্ষ থেকে ই-ভোটিং চালুর দাবি আসছে। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতি যেসব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেছেন তাদের মধ্যে কয়েকটি দল সংলাপে ই-ভোটিং চালুর প্রস্তাব দিয়েছেন বলে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সংসদ নির্বাচনে ই-ভোটিং চালুর কথা বলেছেন। তিনি ২০১৭ সালে সংসদের প্রশ্নোত্তরে ই-ভোটিং চালুর কথা বলেছিলেন। তিনি বলেন, সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য বর্তমানে বিরাজমান সব বিধিবিধানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জনমানুষের ভোটাধিকার সুনিশ্চিতের স্বার্থে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ই-ভোটিং প্রবর্তনের পরিকল্পনাও বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে।