আখাউড়ায় অনিয়ম পেয়ে ৮৮ ঘরের নির্মাণকাজ বন্ধ করলেন ডিসি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

কাজের নির্দেশনা অনুযায়ী নেই রডের দেখা। কোথাও রডের বদলে দেওয়া হয়েছে তার। কোথাও কোথাও নিয়ম অনুসারে নির্ধারিত মানের রড দেওয়া হয়নি। এক রড থেকে আগের রডের দূরত্ব নিয়ম মেনে দেওয়া হয়নি। ইট, বালু, সিমেন্টের মান নিয়েও উঠে প্রশ্ন।ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজে এ ধরনের অনিয়ম পেয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি)।

বৃহস্পতিবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রকল্প পরিদর্শনে গিয়ে ব্যাপক অনিয়ম দেখে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন তিনি। অনিয়ম বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

universel cardiac hospital

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম নিজেই এসব প্রকল্প পরিদর্শনে যান। এ সময় তিনি রাজমিস্ত্রি ও সহাকরি নিয়ে যান। অনিয়ম দেখে কিছু কিছু ভবনের অংশ তিনি ভাঙতে বলেন। এ সময় নির্ধারিত রড না দেওয়াসহ নানা অনিয়ম রেরিয়ে আসে। ক্ষুব্ধ জেলা প্রশাসক এ সময় কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন। ইউএনও, অ্যাসিল্যান্ড ও পিআইওকে ভৎর্সনা করেন তিনি। উপজেলার খলাপাড়া, ঘাগুটিয়াসহ ৮৮টি ঘর নির্মাণে অনিয়ম পেয়ে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন ডিসি।

এদিকে প্রকল্প বাস্তবায়নে জায়গা নির্ধারণেও এখন অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। উপজেলাতে অনেক সরকারি জায়গা থাকলেও কেনার দিকে ঝুঁকছে উপজেলা প্রশাসন। ৩০-৪০ হাজার টাকার জায়গা এক থেকে দেড় লাখ টাকায় কেনা হচ্ছে। একটি কেনা জায়গা (টিলা) থেকে লাখ লাখ টাকার মাটি বিক্রি করে দেওয়া হলেও টাকার কোনো হদিস নেই।

জেলা প্রশাসকের পরিদর্শনের সময় অভিযোগ উঠে, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও ঠিকাদার নুরুজ্জামান ভূঁইয়াকে ১৬৯টি ঘরের কাজ দেন ইউএনও। এ সময় পিআইও জানান, ঘর নির্মাণে অনিয়মের বিষয়টি ইউএনওকে জানানো হলেও তিনি কর্ণপাত করেননি।

মনিয়ন্দ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল আলম চৌধুরী দীপক জানান, জেলা প্রশাসক তার এলাকার আশ্রয়ণ প্রকল্পও পরিদর্শন করেন। এ সময় ঘর নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও রডের বিভিন্ন অনিয়ম পাওয়া যাওয়ায় কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন।

ইউএনও রুমানা আক্তার গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে জেলা প্রশাসকের নির্দেশনার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, কাজে অনিয়ম পাওয়ায় বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার যে এমন কাজ করবে সেটা তিনি বুঝতে পারেননি।

জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম জানান, তিনি উপজেলার একাধিক আশ্রয়ণ প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন। এ প্রকল্প নিয়ে নিয়ে কোনো ধরণের অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না। এ বিষয়ে কোনো কর্মকর্তার অনিয়ম গাফিলতি পাওয়া গেলে প্রয়োজনে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মো. নুরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, ‘আমাকে মালামাল সরবরাহ করতে বলা হয়। কাজ কিভাবে কি হচ্ছে সেটা ইউএনওসহ সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব। এখন এ নিয়ে আমার উপর দোষ চাপালেও তো হবে না।’

শেয়ার করুন