নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের চৌমুহনী বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ঈদ বাজারে সাজানো কমপক্ষে ২০০ দোকান পুড়ে গেছে। এতে অন্তত ১০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আগুনের খবর শুনে রিংকু (৪০) নামের এক ব্যবসায়ী হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। এছাড়া আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীসহ অন্তত ১০ জন গুরুতর আহত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টার দিকে চৌমুহনী বাজারের ব্যাংক রোডের স্টেশন মার্কেট, ইসলাম মার্কেট ও হোসেন মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনা ঘটে।
ব্যবসায়ীদের দাবি, ঈদ উপলক্ষে সাজানো দোকান পুড়ে তাদের অনেকে নিঃস্ব হয়ে পথের ফকির হয়ে গেছেন। এদিকে, অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে থাকা ব্যবসায়ী রিংকু আগুনের খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে এসে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান।
নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম জানান, ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট সাড়ে চারঘণ্টা চেষ্টার পর রাত সাড়ে ১১টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। আগুনে ব্যবসায়ীদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বাজারের নিরাপত্তায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার ইফতারের পর হঠাৎ রেলগেইটের স্টেশন এলাকার একটি দোকানে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। পরে মুহূর্তের মধ্যেই আগুনের লেলিহান শিখা স্টেশন রোডসহ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
এতে স্টেশন মার্কেট, হোসেন মার্কেট ও ইসলাম মার্কেটের জুতার দোকান, ফার্মেসী, কাপড়, হার্ডওয়্যার, বই, প্লাস্টিক ও গ্যাস সিলিন্ডারের দোকানসহ হকারদের ২০০ দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
খবর পেয়ে চৌমুহনী, মাইজদী, চাটখিল, কবিরহাট, সেনবাগ, কোম্পানীগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর ও ফেনীর ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে ছুটে যায়।
রাত পৌনে ১২টায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।
অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে স্থানীয় নোয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহ্বাজ মামুনুর রশিদ কিরন, জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান, পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম, চৌমুহনী পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা খালেদ সাইফুল্যাহ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামছুন নাহার ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনিসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান।