আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে একটি মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণে অন্তত ৫০ জন নিহত ও আরও অনেকে আহত হয়েছেন। তবে তালেবান সরকারের তরফে ১০ জন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) এ ঘটনা ঘটে। পবিত্র রমজান মাসে দেশটিতে সাধারণ মুসল্লিদের টার্গেট করে বেশ কয়েকটি হামলার ঘটনা ঘটলো।
তালেবান সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ডেপুটি মুখপাত্র বেসমুল্লাহ হাবিব জানান, কাবুলের খলিফা সাহিব মসজিদে এ বিস্ফোরণ ঘটে।
জানা গেছে, রমজানের শেষ শুক্রবার, জুমার দিন উপলক্ষে শত শত মুসল্লি অংশ নিয়েছিলেন নামাজে। নামাজের শেষ সময়ে বিস্ফোরণের এ ঘটনা।
ওয়াহিদ নামে ৩০ বছর বয়সী এক যুবক বলেন, তিনি বাড়ি থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান। এরপর ছুটে যান মসজিদে। তার ভাই ছিল সেখানে। তিনি সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকেন। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিতেও সহযোগিতা করেন ওই যুবক। ওয়াহিদ বলেন, ভয়াবহ দৃশ্য দেখেন তিনি, আশপাশের সবাই রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে এবং চিৎকার করছে।
মসজিদের প্রধান সাইদ ফাজিল আঘা বলেন, ধারণা করা হচ্ছে আত্মঘাতী কোনো হামলাকারী অংশ নিতে পারেন নামাজে। তিনি বলেন, আমি বেঁচে গেছি, কিন্তু স্বজন হারিয়েছি।
এ হামলার দায় এখনো কেউ স্বীকার করেনি।
এর আগে আফগানিস্তানের মাজার-ই-শরিফে আলাদা দুটি মিনিবাসে থাকা বোমা বিস্ফোরণে অন্তত নয়জন নিহত হন। দুটি ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৩ জন। বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) এ হামলার ঘটনা ঘটে। শহরটিতে একটি শিয়া মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণের এক সপ্তাহ পর ফের এ হামলা হয়।
গত আগস্টে তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর দেশটিতে জনসমাগমস্থলে হামলা বেড়ে গেছে। এসব হামলার ঘটনায় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে তালেবান সরকার। আফগানিস্তানের তালেবান সরকার জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের খোরাসান শাখাকে (আইএস-কে) পরাজিত করেছে বলে দাবি করলেও তাদের নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
আইএস তালেবানের মতো একটি সুন্নি দল কিন্তু দুটি গোষ্ঠীই তিক্ত প্রতিদ্বন্দ্বি। উভয়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় আদর্শগত পার্থক্য হলো তালেবানরা শুধু বিদেশি বাহিনী মুক্ত আফগানিস্তান চেয়েছিল, যেখানে আইএস একটি ইসলামী খেলাফত চায়।
সূত্র: আল-জাজিরা, রয়টার্স